পরীক্ষা শেষ হওয়া মাত্রই বাড়ি ফিরবেন, বলেছিলেন মা’কে। কিন্তু আর ফেরা হয় নি। চাচাতো ভাইয়েরা ব্যক্তিগত কাজে শহরে এসে জানতে পেরেছিলেন তাদের বোন খাদিজা আক্তার নার্গিস হামলার শিকার হয়েছেন। যে হামলার খবর পৌঁছে গেছে সারাবিশ্বে। প্রথমে এই খবরটি খাদিজার মা’কে জানাতে চাননি তারা। কিন্তু হামলার পরপরই যখন সাংবাদিকরা খাদিজার বাড়ি যাওয়া শুরু করলেন, তখন এই খবরটি আর চেপে রাখা যায়নি।গত সোমবার (৩ অক্টোবর) শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের চাপাতির আঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় খাদিজাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে সেলাই দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার ভোরে খাদিজাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খাদিজার মস্তিস্কে অস্ত্রোপচারের পর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার পর তার অবস্থা জানা যাবে। বৃহস্পতিবার যখন জানা গেলো, খাদিজার সর্বশেষ অবস্থা জানা যাবে শনিবার, তখনই সবার মুখে একটিই প্রশ্ন, খাদিজার কী খবর? কবে আসবেন তিনি? সিলেটের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন নিয়ে মাঠে থাকলেও, মোবাইলে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় চোখ রাখছিলেন তারা। হকারদের কাছ থেকে জাতীয় পত্রিকার চেয়ে স্থানীয় পত্রিকার কাটতিও ছিলো বেশ।বুধবার বিকেলে যখন খাদিজার মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিলো, তিনি বলছিলেন, আমার মনি (খাদিজা) খই (কোথায়)? খাদিজার বাড়িভর্তি মানুষেরাও সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন, আমরার ফুরি (মেয়ে) বাঁচবোতো?সিলেটের প্রবেশদ্বার কীনব্রীজ থেকে শুরু জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, মদিনা মার্কেট, টিলাগড়, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসসহ সকল জায়গাতেই খাদিজার সর্বশেষ খবর নিচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। খাদিজার খবর টিভিতে দেখার জন্য কেউবা রিমোট চেপে এক চ্যানেল থেকে অন্য চ্যানেলে যাচ্ছেন।অন্যদিকে অভিযুক্ত বদরুলের ক্যাম্পাস শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুটা থমথমে পরিবেশ বিরাজ করলেও ছেলেদের হলগুলোর বিভিন্ন পত্রিকা স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে খাদিজার খবর নিচ্ছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজার ছুটি হয়ে যাওয়ায় টং দোকানে বসে কেউ কেউ আড্ডা দিচ্ছেন এবং অধিকাংশ আড্ডার বিষয় খাদিজার শরীরের অবস্থা কেমন? কবে সিলেট আসছেন তিনি?মোজাহিদুল ইসলাম টিটু/এআরএস/পিআর
Advertisement