বিশেষ প্রতিবেদন

জেলা পরিষদ নির্বাচনে কৌশলী বিএনপি

জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রবল আগ্রহ উৎসাহ লক্ষ্য করা গেলেও এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না দলের শীর্ষ নেতারা। আসছে জানুয়ারির মধ্যেই এই নির্বাচন শেষ করতে তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ লক্ষে সরকার সমর্থিতরা কাজ করলেও দৃশ্যত কৌশলী অবস্থানে বিএনপি।গত সোমবার জেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০১৬ আইন অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে বর্তমান প্রশাসকদের পদত্যাগের বিধানটি যুক্ত করা হয়েছে অধ্যাদেশে। বাকি সব বিধান আগের মতোই রাখা হয়েছে।  স্থানীয় সরকার আইনে জেলা পরিষদ অধ্যাদেশ যুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি পায়নি পরিষদগুলো। ওই অর্থে পরিষদগুলো কার্যকর হয়নি এখনো। প্রধানমন্ত্রী চান যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বসিয়ে জেলা পরিষদকে আরো গতিশীল করতে।পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা বাদে বাকি ৬১টিতে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ দেয়  সরকার। তখন স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বলেছিলেন, ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হবে। কিন্তু পরে তা সম্ভব হয়নি।  ইতিমধ্যে কিছু জায়গায় মৃত্যুজনিত কারণে প্রশাসকের পদ শূন্য হওয়ার পর সেখানে একই ধারায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে অন্যদের। বর্তমান আইন অনুযায়ী, একজন চেয়ারম্যান, ১৫ সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের পাঁচ নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হবে। চেয়ারম্যানসহ এ ২০ সদস্যকে নির্বাচন করবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সিটি কর্পোরেশন (থাকলে), উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে অনুমোদন ও কার্যকর হওয়া বাংলাদেশ সংবিধানের ৫৯(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হইবে। ইতিমধ্যে আইনের দ্বারা ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদকে প্রশাসনিক ইউনিট ঘোষণা করা হয়েছে। পৌরসভা/ সিটি কর্পোরেশনও এর অন্তর্ভুক্ত। পরে নির্বাচনের বিধান রেখে প্রতিটি ইউনিটের জন্য আলাদা আইন করা হয়। এ আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনও হয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদ নিয়ে টালবাহানা চলে আসছে।স্বাধীনতার পর প্রথম ১৯৮৮ সালে জেলা পরিষদগুলোতে চেয়ারম্যান হিসেবে সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয় সংসদ সদস্যদের। ১৯৯০ সালে এরশাদের  পতনের পর ১৯৯১ সালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। তখন থেকে একজন সরকারি কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে চলছিল জেলা পরিষদ। এর দীর্ঘ ১৮ বছর পর ২০০৯ সালে জেলা পরিষদে প্রশাসক হিসেবে স্থানীয় নেতাদের নিয়োগ দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এবার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জাগো নিউজকে বলেন, জেলা পরিষদ নিয়ে দলের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি।ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর বলেন, এ ব্যাপারে ব্যাক্তিগত মতামত নেই। দল যে সিদ্ধান্ত নেয় তাই হবে।অপর ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তো স্থানীয় সরকার নির্বাচন সবই করেছি। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বলার সময়ও হয়নি।এমএম/এএইচ/পিআর

Advertisement