খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কোপানোর কথা স্বীকার করেছে ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম। স্বীকারোক্তিতে তিনি আদালতকে জানিয়েছে, ২০০৯ সালে খাদিজাদের বাড়িতে লজিং থাকতো তিনি। ওই সুয়োগে খাদিজার সঙ্গে তার ২০০৯ সাল থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।বুধবার বিকেলে অতিরিক্ত মহানগর মুখ্য হাকিম উম্মে সারাবান তহুরার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানায় বদরুল।বদরুল আদালতকে জানায়, তারা দুজন প্রতিজ্ঞা করেছিল কেউ অন্য কারো সঙ্গে সর্ম্পকে জড়াবে না এবং অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। কিন্তু খাদিজার পরিবার বিষয়টি জানার পর এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর তাকেও লজিং থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপরও বদরুল একাধিকবার সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়।খাদিজা তাকে অপমান করায় ঘটনার দিন বদরুল আম্বরখানা এলাকা থেকে গরুর মাংস কাটার একটি চাপাতি আড়াইশ টাকা ক্রয় করে ব্যাগে করে এমসি কলেজে যায়। সেখানে খাদিজাকে তাদের প্রেমের প্রতিজ্ঞার কথা জানালে খাদিজা তাকে প্রত্যাখান করে সামনে এগুলে তার মাথায় রাগ উঠে যায়। এরপর ব্যাগ থেকে চাপাতি বের করে বদরুল কোপাতে থাকে।মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) তৌহিদুর রহমান জানান, কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে হত্যাচেষ্টা মামলার একমাত্র আসামি বদরুল আলম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর পরপরই পুলিশ তাকে কড়া পাহায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যায়।এর আগে ওসমানী হাসপাতাল থেকে এই আসামীকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে এসে আদালতে হাজির করে শাহপরান থানা পুলিশ।প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিকেলে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি পাসের ছাত্রী খাদিজা। পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম (২৭)।তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সুনাইঘাতি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে। বদরুল বর্তমানে শাবির শাহপরান হলে থেকে লেখাপড়া করতেন। ঘটনার পরপরই স্থানীয় জনতা তাকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করেন। তাকেও ওসমানী হাসপাতালে পুলিশি প্রহরায় চিকিৎসা দেওয়া হয়।খাদিজার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।ছামির মাহমুদ/এমএএস/আরআইপি
Advertisement