জাতীয়

বিচারপতিদের পেনশন বৃদ্ধি করে সংসদে বিল পাস

বিচারপতিদের পেনশন বৃদ্ধি করে অবশেষে সংসদে পাস হলো সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (ছুটি, পেনসন ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন। সংসদের সপ্তম অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন হলেও প্রায় এক বছর চার মাস পর সোমবার জাতীয় সংসদে বিলটি পাস হয়েছে। আনীত সংশোধনীর একটি ছাড়া অন্যগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলটি পাসের বিরোধীতা করে তা জনমত যাচাইয়ের জন্য কতিপয় এমপি প্রস্তাব করলে তাও নাকচ হয়ে যায়। বিলটি পাস করার বিলম্বের কারণ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেলের মতামত পেতে বিলম্ব হওয়াকে দায়ী করা হয়। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি কয়েকটি বৈঠকে আসতে না পারায় বিলটির উপর রিপোর্ট প্রদানে বিলম্ব হয় বলে বিলের রিপোর্টে উল্লেখ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। কমিটি ২০১৫ সালে চারটি ও চলতি বছর তিনটি বৈঠক করে বিলটি চূড়ান্ত করে। তবে বিলে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকরা সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (লিভ, পেনশন এন্ড প্রিভিলেজ) অর্ডিন্যান্সে ইতিপূর্বে ১৯৮৪, ৮৫, ১৯৯০, ৯৩ ও ২০০১ সালে আনীত সংশোধনী সম্পর্কে কোন কিছু উল্লেখ করা হয়নি। ১৯৮২ সালের অ্যাক্টের ২১ অনুচ্ছেদের উপ অনুচ্ছেদ ১ এর বি’র ৩টি উপ-অনুচ্ছেদে ছুটি, পেনশন ও ভাতা বৃদ্ধির জন্য সংশোধনী আনা হয়। কিন্তু পরিশিষ্টতে দেখা যায় বৃদ্ধির হার নির্ধারিত হয়েছে ১৯৮৪, ৮৫, ১৯৯০, ৯৩ ও ২০০১ সালে আনীত সংশোধনীর পরবর্তী পর্যায় থেকে।বিচারপতিদের মাসিক পেনশনের পরিমাণ ১৯৯৩ সালের সংশোধিত অ্যাক্ট বলে নির্ধারিত ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে চলতি সংশোধনীতে ৮ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারপতিদের পেনশন নির্ধারিত হবে মোট চাকরিকালীনকে মাসের হিসেবে গুণ করে প্রতিমাসে ২৫০ টাকা হারে। তবে এ হিসেবে কেউ ৮ হাজার ৫০০ টাকার বেশি পাবেন না। একইভাবে বিলে বিচারপতিদের বয়সানুপাতে পেনশন সুবিধার হার বণ্টন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিলে বিচারপতিদের অবসরের বয়স ৪৫ বছরের কম হলে প্রাপ্যতার হার ২৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৬০ টাকা হারে, অবসরকালীন বয়স ৪৫ বছরের বেশি কিন্তু ৫০ বছরের কম হলে প্রাপ্যতার হার ২১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪৫ টাকা হারে এবং অবসরকালীন বয়স ৫০ বছর বা তার বেশি হলে পেনশনের হার ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করা হয়েছে। এই বিল ২০১৩ সাল থেকে কার্যকর হবে বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। এজন বিচারক অবসরে গেলে, পদত্যাগ করলে বা পদচ্যুত হলেও পেনশন পাওয়ার যোগ্য হবেন। তবে পাঁচ বছর কম হলে পেনশন পাবেন না। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকরা সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (লিভ, পেনশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ অনুযায়ী বাধ্যতামূলক সমর্পিত পেনশন প্রাপ্ত হন। সরকার ২০১৩ সনের ডিসেম্বর মাসে সরকারি কর্মচারিদের অবসর পরবর্তী জীবনের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাধ্যতামূলক সমর্পিত পেনশনের বিপরীতে প্রদত্ত আনুতোষিকের হার বৃদ্ধি করে। তবে সুপ্রিম কোর্টের অবসর প্রাপ্ত বিচারকদের উক্ত আনুতোষিক হার এখনও বৃদ্ধি করা হয়নি। এমতাবস্থায় উক্ত উদ্দেশ্য পূরণে সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (লিভ, পেনশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অ্যাক্ট ২০১৬ বিলটি আনা হয়।এইচএস/জেএইচ/এবিএস

Advertisement