পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ বলেছেন, ‘পাকিস্তানে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। পাক সেনারাই সর্বেসর্বা।’ ওয়াশিংটনের এক সভায় এ কথা স্বীকার করলেন মোশাররফ।মোশাররফ আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই পাকিস্তানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে সেনাবাহিনী। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে ছেলেখেলা শুরু করে ক্ষমতায় আসীন হন কিছু লোক। তখনই সেনাদের প্রাধান্য বাড়তে থাকে।’তার মতে, ‘দেশে শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সময়ই গলদ ছিল। গণতন্ত্র জিনিসটা কী, তা বুঝে ওঠার সুযোগই পায়নি সাধারণ মানুষ। সংবিধানেও এ বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলা হয়নি। ক্ষমতায় এসে স্বৈরাচার চালাতেই ব্যস্ত ছিলেন সকলে। অর্থনৈতিক মন্দাই হোক বা রাজনৈতিক অচলাবস্থা, আপনা থেকেই নিজের ঘাড়ে দায়িত্ব তুলে নেয় সেনারা। দেশে সরকারের তুলনায় সেনাদের ওপরই বেশি ভরসা মানুষের। তাই প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হলেও, প্রশাসনের বড় অংশে সেনাদের প্রাধান্য রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।দীর্ঘদিন পাকিস্তানের দায়িত্ব সামলেছেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। পাকিস্তানের মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাক সেনাদের কাছেই সাধারণ মানুষের সব দাবি-দাওয়া। ৪০ বছর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলেছি। দুটি যুদ্ধে লড়েছি। সব রকমের সাহায্য পেয়েছি। সেজন্য গর্ব অনুভব করি।’ যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে ইচ্ছামত ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মোশাররফ। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। রাজদ্রোহ, জরুরি অবস্থা জারি, বেআইনিভাবে বিচারপতি বরখাস্ত, বেনজির ভুট্টো হত্যা এবং লাল মসজিদ তল্লাশি অভিযান সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি মামলা ঝুলছে তার নামে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসেই বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা নবাব আকবর বুগতির হত্যা মামলায় রেহাই পান মোশাররফ। মার্চ মাসে সরকার তাকে দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়। তারপরই দেশ ছাড়েন তিনি। দেশে ফেরা নিয়ে মোশাররফ জানান, ‘রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়েছি আমি। ফের ক্ষমতা দখলের ইচ্ছা নেই। দেশের মানুষ ভালো থাকলেই হল।’দেশের বাইরে চলাফেরায় সরকার তার ওপর নিষেধাজ্ঞা না চাপালে ইসলামাবাদে ফিরবেন বলেও আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।টিটিএন/এমএস
Advertisement