প্রস্তাবিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়ার ৯০ শতাংশই অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। আইনের এই খসড়া বাতিল করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে এটি তৈরি করার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি।শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আয়োজিত ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি বিল-২০১৬’ পর্যালোচনা ও নাগরিক অধিকার বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি এই মতামত জানান। কমিটির আহ্বায়ক ড. শাহদীন মালিক আরও বলেন, সাইবার সংক্রান্ত অপরাধ হচ্ছে, এ সংক্রান্ত অপরাধ সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই একটা আইন দরকার। তবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের যে খসড়া করা হয়েছে এর ৯০ শতাংশই অগ্রহণযোগ্য। যে আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে তাতে ঘষামাজা করেও কোনো লাভ হবে না। এটা সম্পূর্ণ নতুন করে তৈরি করতে হবে।ড. শাহদীন মালিক বলেন, আমাদের দেশে আইন তৈরি করার অর্থ হচ্ছে নাগরিকদের অধিকার সীমিত করা। প্রতিটি আইন করার মাধ্যমে নাগরিকদের অধিকার ক্রমান্বয়ে সীমিত করা হচ্ছে। সরকার নাগরিকদের অধিকারের ওপর যেন সহজে আক্রমণ করতে না পারে তা আলোচনা করে তুলে ধরতে হবে।আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়ার ধারা-৩ এ বলা হয়েছে এটি একটি সম্পূরক আইন হিসেবে ব্যবহার হবে। এতেই বোঝা যায় এই আইনটির কোনো প্রয়োজন নেই। ক্ষমতা প্রয়োগের চিন্তা থেকে এই আইন তৈরির চিন্তা করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।তিনি বলেন, খসড়া এই আইনের অনেকগুলো দিকে অস্পষ্টতা রয়েছে। যারা এই খসড়াটি করেছেন তাদের মধ্যে আইন সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। যারা ফালতু ও পচা এই খসড়া করেছেন তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আরও বলেন, সাইবার ক্রাইমগুলোর বিচারের জন্য আমাদের দণ্ডবিধি, আইসিটি অ্যাক্ট ও টেলিকমিউনিকেশন আইনসহ বেশ কিছু আইন রয়েছে। নতুন করে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রয়োজন নেই। এটি মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করবে বলে মনে করেন তিনি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে নিরাপত্তা এজেন্সি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এটি আইসিটি বিভাগের অধীনে কাজ করবে। এই আইনে অনেক অস্পষ্টতা রয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে অপব্যবহারের সুযোগ বেড়ে যাবে। রাষ্ট্রের ক্ষমতা যেন অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয় সেই চিন্তা করে আইন করতে হবে।আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান, নারীপক্ষের শিরিন হক ও ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।এফএইচ/এআরএস/এবিএস
Advertisement