মতামত

শিল্পে গ্যাস সংকট দূর করুন

শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংকট দেখা দিলে উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং এর ক্ষতি নানামুখি। কাজেই শিল্প উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হলে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে। গত কয়েকদিন থেকে  টঙ্গী, আশুলিয়া ও সাভার এলাকায় শিল্প কারখানায় গ্যাস সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ফলে বহু কারখানা দিনের অধিকাংশ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। লাইনে গ্যাস এলেও প্রয়োজনীয় চাপ থাকছে না। এ কারণে বয়লার চলছে না। আর ঘুরছে না কারখানার চাকাও। এ অবস্থা কোনোভাবেই দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। এ অবস্থা উত্তরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। অধিকাংশ কারখানা দিনের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকছে। কিছু কারখানায় বিকল্প উপায়ে উৎপাদন চালু থাকলেও তাতে উৎপাদন ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে।  সমস্যা এত প্রকট যে দিনে ২-৩ ঘণ্টাও কারখানা চালু রাখা যাচ্ছে না। উৎপাদন দুই-তৃতীংয়াংশ কমে গেছে। গ্যাস সংকটের কারণে পোশাক শিল্পেও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সামনে বড়দিন। এই সময়ে অর্ডার বেশি থাকে। অথচ গ্যাস সংকটের কারণে স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না উৎপাদন। দুঃখজনক হচ্ছে, গ্যাস সংকট নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে পেট্রোবাংলা ও তিতাস। তিতাসের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে বলছেন, গ্যাস কম পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য গ্যাসের চাপ-সমস্যা বেড়েছে। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, তিতাস এলাকায় সরবরাহের জন্য আগেও যে পরিমাণ গ্যাস দেওয়া হতো, এখনও তাই দেওয়া হচ্ছে। তাদের বরাদ্দ কমানো হয়নি। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?ভুক্তভোগীরা বলছেন, চলমান গ্যাস সংকটের অন্যতম কারণ অবৈধ গ্যাস সংযোগ। অভিযোগ রয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলোর অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় কিছু কিছু শিল্প কারখানা অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করছে। অনেক কারখানা অনুমোদনের অতিরিক্ত লোডে গ্যাস পোড়াচ্ছে। কেউ কেউ অবৈধভাবে গ্যাস বুস্টার লাগিয়ে লাইন থেকে অতিরিক্ত গ্যাস টেনে নিচ্ছে। ফলে বৈধ ব্যবহারকারীরা পড়েছেন বিপাকে।প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস-এর বিতরণ ও সরবরাহ নিয়ে  নানা রকমের অভিযোগ আছে। এসব আমলে নিয়ে ব্যবস্থা না নিলে গ্যাসের সংকট দূর হবে না। অবৈধ সংযোগ বন্ধ করতে হবে। কেউ যেন বরাদ্দের অতিরিক্ত গ্যাস না নিতে পারে দেখতে হবে সেটিও। অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশের দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৫০ কোটি ঘনফুট, সেখানে পেট্রোবাংলা সরবরাহ করে ২৭০ কোটি ঘনফুট। এ অবস্থায় গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির দিকেও নজর দিতে হবে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করতে হবে। এইচআর/এবিএস

Advertisement