পরমাণু অস্ত্রধারী ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে দুই দেশের অর্ধেক পারমাণবিক অস্ত্র (১০০টি) ব্যবহার হতে পারে। এর ফলে অন্তত দুই কোটিরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। এ ছাড়া বিশ্বের পারমাণবিক ওজন স্তরের অর্ধেক ধ্বংস হবে। ফলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। ২০০৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা এ সতর্কবাণী দিয়েছিলেন। পাক অধিকৃত কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানের পর নতুন করে সেই সতর্কতার কথা সামনে চলে এসেছে। ওই সময় বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, দু’দেশের মিলিত পরমাণু অস্ত্রসম্ভারের অর্ধেক অর্থাৎ ১০০টি অস্ত্রের প্রয়োগ হলে, প্রাণ যাবে অন্তত দুই কোটিরও বেশি মানুষের। মিলিয়ে যাবে গোটা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক ওজন স্তর। শুধু তাই নয়; পারমাণবিক শৈত্য প্রভাবে বিশ্বজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মৌসুমী আবহাওয়া, কৃষিতে নেমে আসবে বিপর্যয়। কয়েক দিন আগে রাজ্যসভায় ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ সুব্রাহ্মণ্যম স্বামী পাকিস্তানে পরমাণু হামলার আহ্বান জানান। পরে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি ইসলামাবাদে হামলা হলে ভারতকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়। বিজেপির এই সাংসদ গত ২৩ সেপ্টেম্বর বলেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক হামলায় যদি ১০ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটে তাহলে পাকিস্তানকে ধুঁয়ে মুছে ফেলা হবে। তবে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হলে যে শুধু ভারত-পাকিস্তানের ক্ষতি হবে তা নয়। এর প্রভাব পড়বে পুরো বিশ্বে। ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাটগারস বিশ্ববিদ্যালয়, কলোরাডো-বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা বলেন, পাক-ভারত পরমাণু যুদ্ধ হলে বিস্ফোরণের তীব্রতা ও রেডিয়েশনের প্রতিক্রিয়ায় প্রথম সপ্তাহেই ২ দশমিক ১ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে পরিমাণ প্রাণহানি হয়েছিল তার অর্ধেক হবে এই যুদ্ধে। গত নয় বছরে (২০১৫ সালের আগে) নাশকতার কারণে ভারতে যত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবারের যুদ্ধে তার পরিমাণ হবে ২ হাজার ২২১ গুণ বেশি। উল্লেখ্য, বুধবার গভীর রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাক অধিকৃত কাশ্মিরে ঢুকে সাতটি সন্ত্রাসী আস্তানায় অভিযানের দাবি করেছে। অভিযানে অন্তত দুই পাক সেনা ও ৩৮ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।তবে পাকিস্তানের ভেতরে ভারতের সেনা অভিযানের খবর নাকচ করে দিয়ে পাকিস্তান বলছে, কাশ্মিরে ঢুকে পড়ায় পাক সেনাবাহিনীর গুলিতে ৮ ভারতীয় সেনা নিহত ও এক সেনা সদস্যকে আটকের দাবি করেছে ইসলামাবাদ। ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পাঠানকোটে সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয় ভারতের। পাঠানকোট হামলায় পাকিস্তান জড়িত বলে ভারত দাবি করলেও পাকিস্তান বরাবরই তা নাকচ করে আসছে। এ ঘটনার জেরে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশের মাঝে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে বাজছে যুদ্ধের দামামা।সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।এসআইএস/পিআর
Advertisement