কয়েক বছর আগে যে রকম দ্রুতগতিতে ইসলামিক স্টেট ইরাক ও সিরিয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নিয়েছিল তাদের সেই অগ্রযাত্রা এখন অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে।দুটি দেশেই ইসলামিক স্টেট গুরুত্বপূর্ণ বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এর বিপরীতে সিরিয়ার পালমিরা শহরের আশপাশে কিছু জায়গা দখল করেছে। আইএইচএস কনফ্লিক্ট মনিটর নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটের দখলে যে পরিমাণ জায়গা ছিল ২০১৬ সালের জুলাই নাগাদ তার এক-চতুর্থাংশই হারিয়ে ফেলেছে আইএস।ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ইসলামিক স্টেটের দখলে থাকা এলাকার পরিমাণ ১২ শতাংশ কমেছে। তাদের দখলে থাকা এলাকার পরিমাণ এখন প্রায় ৬৮ হাজার ৩শ বর্গ কিলোমিটার; যা ২০১৫ সালে ছিল ৭৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার।গত ১৮ মাসে ইসলামিক স্টেটের এলাকা হারানোর গতি দ্রুততর হয়েছে। এতে স্পষ্ট হচ্ছে যে তাদের প্রশাসনিক প্রকল্পগুলো ভেঙে পড়ছে, তাদের আয়ও কমে গেছে। ২০১৫ সালে তাদের মাসিক আয়ের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ডলার- যা ২০১৬ সালের মার্চ মাসে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।সম্ভবত মার্চের পরের কয়েক মাসে এই আয়ের পরিমাণ আরো ৩৫ শতাংশ কমে গেছে- বলেন আইএইচএসের সিনিয়র বিশ্লেষক লুডোভিকো কারলিনো। আইএইচ এসের আরেকজন বিশ্লেষক কলাম্বো স্ট্র্যাক বলছেন, আগামী এক বছর সময়কালের মধ্যে আরো শহর ইসলামিক স্টেটের হাতছাড়া হয়ে যাবে এবং তার ফলে একটি কনভেনশনাল বাহিনী হিসেবে আইএস টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত তারা পরাজিত হবে।স্ট্র্যাক বলেন, তুরস্ক সীমান্তই তাদের খিলাফতে যাওয়া আসার একমাত্র পথ, তবে ২০১৫ সালের জুনে তাল-আবিয়াদ শহরের পতনের পর তাদের আয়ের ওপর চাপ বেড়ে গেছে। ২০১৪ সালে জুন মাসে ইসলামিক স্টেট যখন ইরাকের মসুল শহর দখল করে নেয় তখনই সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকৃষ্ট হয় এই জিহাদি গ্রুপটির প্রতি। সে সময় তারা ইরাকের রাজধানী বাগদাদের কাছাকাছি এসেছিল। তাদের সেরা সময়ে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রায় ১ কোটি লোক বাস করতেন।কিন্তু এখন আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকার লোকসংখ্যা ৬০ লাখের কাছাকাছি। খুব সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যুদ্ধ, সন্ত্রাস, এবং সহিংসতায় ২৩ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন, যা বলছে জাতিসংঘের এক হিসেব। বিবিসি বাংলা।এসআইএস/এমএস
Advertisement