দেশের বাজারে ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, কাঁচামরিচ, লালশাকসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজিতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কীটনাশক মেশানো হচ্ছে। উৎপাদক পর্যায় থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পৌঁছানো পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ডাইমিথয়েট, কুইনালফস, ক্লোরোপাইরোফস, ম্যালাথিয়ন, ইথিলফিনাইলনাইট্রোফিনিল (ইপিএন), ইথোপ্রোফস ও মিটালক্সিল নামক কীটনাশক মেশানো হচ্ছে। মহাখালীর ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের (আইপিএইচ) ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি (এনএফএসএল) পরিচালিত এক জরিপ প্রতিবেদনে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ‘মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন অব হর্টিকালচার প্রোডাক্ট অ্যান্ড আদার ফুড কমোডিটিজ ফর কেমিক্যাল কন্টামিনেশন অ্যাট ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি : অ্যান অ্যাপ্রাইজেল অব ফুড সেফটি সার্ভে ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে চালানো জরিপের তথ্য উঠে এসেছে। জরিপের জন্য বিভিন্ন উপজেলা (কৃষক পর্যায়), পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজার থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের মাধ্যমে মোট ১৫ রাউন্ডে (২৭টি কওে নমুনা) শাকসবজি, ফল, মুড়ি, শুটকি, মরিচ ও হলুদের গুঁড়াসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর মোট চার শতাধিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শাকসবজির ৩২৪টি নমুনার মধ্যে ৪৭টি নমুনায় অর্থাৎ প্রায় ১৫ ভাগ নমুনায় কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া যায়।এরমধ্যে উচ্চমাত্রার শতকরা ৩৪ ভাগ ডাইমিথয়েট, ৩২ ভাগ কুইনালফস, ১৭ ভাগ ক্লোরোপাইরোফস কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়াও স্বল্প পরিমাণ ম্যালাথিয়ন, ইথিলফিনাইলনাইট্রোফিনিল (ইপিএন), ইথোপ্রোফস ও মিটালক্সিল নামক কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট জাগোনিউজকে বলেন, কীটনাশকযুক্ত শাকসবজি খেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে শারীরিক ক্ষতি না হলেও দীর্ঘমেয়াদে এর কারণে মানবদেহে বড় ধরনের রোগব্যাধী বাসা বাধার ঝুঁকি রয়েছে। জানা গেছে, শাকসবজি ছাড়া মরিচের গুঁড়ায় মারাত্মক ক্ষতিকর সুদান রেড ও আলফাটক্সিন নামক কীটনাশক ও রং ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া আঙুর, খেজুর ও আমে ফরমালডিহাইড পাওয়া গেলেও তা সহনশীল মাত্রার মধ্যে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কৃষক পর্যায়ে উৎপাদিত নমুনা দোহার, কেরানীগঞ্জ, সাভার, ধামরাই, কালিয়াকৈর, গাজিপুর, কাপাসিয়া, আশুলিয়া, নরসিংদী ও রুপগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা হয়। পাইকারী বাজারের নমুনা যাত্রাবাড়ী, কারওয়ানবাজার, আমিনবাজার, টঙ্গীবাজার, খিলক্ষেত বাজার, মিরপুর-১ বাজার ও শ্যামবাজার থেকে নেওয়া হয়।খুচরা বাজারের মধ্যে নিউমার্কেট, রজনীগন্ধা বাজার, মিরপুর ৬, বনানী বাজার, গুলশান ১ মার্কেট, উত্তরা রাজউক বাজার, মহাখালী বাজার, মালিবাগ বাজার, আশুলিয়া বাজার ও নাখালপাড়া বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়।এমইউ/এনএফ/এবিএস
Advertisement