ধর্ম

কবরের প্রশ্ন সম্পর্কে বিশ্বনবি

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক জীবনকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।’ দুনিয়ার জীবনই মানুষের জন্য শেষ নয়। দুনিয়ার এ জীবনের পরেই শুরু হবে মানুষের চিরস্থায়ী জীবনের পথ চলা। মানুষের এ স্থায়ী জীবনের সুখ-শান্তি নির্ভর করবে তাঁর দুনিয়ার ভালো কর্মকাণ্ডের ওপর।মৃত্যু পরবর্তী চিরস্থায়ী জীবনের অনন্ত সময়ের ভালো-মন্দ নির্ভর করবে, দুনিয়ার কর্মকাণ্ড ও কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান। কবরের প্রশ্নগুলো কেমন হবে এবং তার ফলাফল কেমন হবে এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যা তুলে ধরা হলো-হজরত বারা ইবনে আজেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়অ সাল্লামের সঙ্গে জানাযায় বের হই। এতে বর্ণিত হয় যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কবরবাসীর নিকট দু’জন ফেরেশতা আসবেন। অতঃপর তাকে উঠিয়ে বসানো হবে এবং জিজ্ঞাসা করবেন, তোমার রব কে? তখন সে (মুমিন হলে) বলবে, আমার রব আল্লাহ।আবার জিজ্ঞাসা করবেন, তোমার দ্বীন কি? উত্তরে সে (মুমিন হলে) বলবে, আমার দ্বীন ইসলাম। তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসা করবেন, তোমাদের নিকট প্রেরিত এ ব্যক্তিটি কে ছিলেন? উত্তরে সে (মুমিন হলে) বলবে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ)অন্য হাদিসে এসেছে যে, মৃতব্যক্তিকে দাফনের পর আত্মীয় স্বজন যখন চলে যায়, মৃতব্যক্তি তখন তাদের হাটাচলা বা জুতার শব্দ শুনতে পান। অতঃপর মৃতব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে দু’জন ফেরেশতা আসেন।হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘বান্দাকে (মৃতব্যক্তি) যখন তার কবরে রাখা হবে এবং তার সাথীরা সকলে চলে যায়, তখন সে তাদের জুতা-স্যান্ডেলের শব্দ শুনতে পায়।অতঃপর তার নিকট দু’জন ফেরেশতা আসবেন এবং তাকে বসিয়ে বলবেন, ‘এ মানুষটি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে (দুনিয়াতে) কি বলতে? তখন সে (মুমিন হলে) বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল।অতঃপর তাকে বলা হবে, দেখ জাহান্নামের সে স্থানটি যার পরিবর্তে আল্লাহ তাআলা তোমাকে বেহেশতের স্থান প্রদান করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তখন সে উভয় স্থান অবলোকন করবে।আর কাফের বা মুনাফেক (প্রশ্নের উত্তরে বিশ্বনিবি সম্পর্কে) বলবে, ‘জানি না, মানুষেরা যা বলতো তাই বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি জাননি এবং পড়নি। অতঃপর তার দু’কানের মাঝে লোহার হাতুড়ি দ্বারা প্রহার করা হবে। আর সে (তখন) এমনভাবে চিৎকার করবে, যা মানুষ ও জ্বিন ব্যতিত তার পার্শ্ববর্তী সকলেই (জীব-জন্তু ও পশু-পাখি) শুনতে পাবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)পরিশেষে...আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের শান্তি ও কল্যাণের জন্য কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। কবরের প্রশ্নগুলোর উত্তর সুন্দরভাবে দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস

Advertisement