অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। বাণীতে তিনি বলেছেন - “বাঙালির ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ফসল বাংলা একাডেমি। ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই বাংলা একাডেমি প্রতিবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন করছে যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এবছরও ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫’ বর্ণাঢ্য আয়োজনে পর্দা উন্মোচিত হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি আরো আনন্দিত যে এবছর গ্রন্থমেলার পাশাপাশি বাংলা একাডেমি ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে চারদিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন’- এর আয়োজন করতে যাচ্ছে।১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে বিশ্ব ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাঙালি জাতি। ৫২-র ভাষা আন্দোলনের প্রেরণাতেই পরবর্তীতে নানা রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করে ’৭১-এ আমরা অর্জন করি বহুকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। কাজেই বাঙালির জাতিসত্তা ও অস্তিত্বের শেকড় ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই প্রোথিত। ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা সেই অমর একুশের চেতনাকেই মূর্ত করে তোলে। মহান ভাষার মাসে আমি ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বাঙালির চিরন্তন উৎসবের রূপটি ফুটে উঠে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের আগমন ঘটে এই মেলায়। মাসব্যাপী গ্রন্থ প্রকাশ ও ক্রয়-বিক্রয় ছাড়াও মেলামঞ্চে আয়োজিত হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের পরস্পর মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে অমর একুশে গ্রন্থমেলা জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক অগ্রসরমানতা নিশ্চিত করে।স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি বিশ্বসাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে সম্মেলনের দ্বার উন্মোচন করে মুক্তচিন্তা এবং বিশ্বসাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি বাঙালির উদার মনোভাবের পরিচয়টি তুলে ধরেছিলেন। এবছরও গ্রন্থমেলার মহোৎসবের পাশাপাশি বাংলা একাডেমিতে ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হবে চারদিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৫’ যা গ্রন্থমেলাকে আক্ষরিত অর্থেই আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অধিষ্ঠিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।আমি ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫’ ও ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৫’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করি।খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
Advertisement