ঈদের রাত শুধু আনন্দ-উৎসবের রাতই নয় বরং আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও সেতুবন্ধনের রাতও এটি। ঈদের রাতের ইবাদাত-বন্দেগির ফজিলত, গুরুত্ব ও মর্যাদা অনেক। এ ব্যাপারে হাদিসের অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। সুতরাং এ রাতটিকে অবহেলায়, গাণ-বাজনায়, মেহেদি উৎসব ও সাজ-সজ্জায় ব্যস্ত না রেখে কুরআন তিলাওয়াত ও নামাজে কাটানো মুসলিম উম্মাহর ঈমানের দাবি।বিশ্বনবির হাদিসে জিলহজ মাসের প্রথম দশদিনকে বছরের শ্রেষ্ঠ দশক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ দশকের প্রতিটি রজনী লাইলাতুল কদরের রজনীর সমতুল্য। হজের মাসের কুরবানির ঈদের রাতের ইবাদাত-বন্দেগির ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-হজরত মুআজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত (ইবাদাত-বন্দেগিতে) জেগে থাকবে; তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব। সেই পাঁচটি রাত হলো- জিলহজ মাসের আট তারিখের রাত; জিলহজের ৯ তারিখের রাত; ঈদুল আজহার রাত; ঈদুল ফিতরের রাত; ১৫ শাবানের রাত।অন্য হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমআর রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, অর্ধ শাবানের রাত এবং দুই ঈদের রাতসহ এ পাঁচ রাতে কোনো দোয়া করে; সে রাতে তার কোনো আবেদনই ফিরিয়ে দেয়া হয় না।ঈদের রাতের আরেকটি বড় প্রাপ্তি হলো, এ রাতে দোয়া কবুল করা হয়। কোনো দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। বরং আল্লাহতায়ালার দরবারে তা সরাসরি কবুল হয়। তাই আমরা আমাদের ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে ঈদের রাতে আল্লাহতায়ালার কাছে আমাদের প্রয়োজনগুলো চাইতে পারি। আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা কামনা, কবরের আজাব থেকে মুক্তি, জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই চেয়ে নিয়ে পরদিন সকালে একেবারে নিষ্পাপ মাসুম শিশুর মতো পবিত্র ঈদের মাঠে আল্লাহর পুরস্কার গ্রহণ এবং প্রতিদান লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ অন্য কোনো রাতে আছে কি?পরিশেষে…ঈদের রাতের আশ্চর্জজনক একটি ফজিলতের ছোট্ট একটি হাদিসে দিয়ে শেষ করতে চাই। হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, বিশ্বনবি বলেছেন, যে ব্যক্তি শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে দুই ঈদের রাত জাগরণ করবে; সে দিন (হাশরের দিন) তার অন্তর মরবে না। যেদিন (হাশরের দিন) সবার অন্তর মারা যাবে। আজ ৯ জিলহজ দিবাগত রাত; মুসলিম উম্মাহর জন্য ঈদের রাত। এ রাতের ইবাদাত-বন্দেগি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত উপকারি। জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করে জান্নাত লাভের অন্যতম মাধ্যম। গোনাহ মুক্ত হয়ে নিষ্পাপ হওয়ার মহাসুযোগ।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ রাতটি ইবাদাত-বন্দেগিতে কাটানোর সুযোগ তৈরি করে দিন। হাদিসে উল্লেখিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/পিআর
Advertisement