মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দ্বিতীয়বার ভারত সফর ও মোদির সঙ্গে উষ্ণ সৌহার্দ্যে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এখন চীনের প্রতিক্রিয়ার দিকে। এটা ধরেই নেয়া হয়, বিশ্ব ব্যবস্থায় ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারতের যে কোনো পদক্ষেপে চীনকে ঠেকানোর উদ্দেশ্য রয়েছে। পশ্চিমা মিডিয়ার অনবরত প্রচারণায় জনগণ এটা ভাবতে শুরু করেছে, ভারতের কল্যাণে ব্রতী হয়ে যুক্তরাষ্ট্র সাত সাগর পাড়ি দিয়ে এসে মোদির পাশে দাঁড়িয়েছে। ভারতেরও খায়েশ আছে সুপার পাওয়ার হওয়ার। তাই আঞ্চলিক রাজনীতি ও বাণিজ্যে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি প্রয়োজন। মোদির লুক ইস্ট পলিসি তাই অনেকটাই চীনের বিরোধী।যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে এসেছে তার নিজের স্বার্থে। ওয়াশিংটনের প্রাইভেট টু এশিয়া কৌশলের উদ্দেশ্য হচ্ছে চীনকে ঘরে আটকে দেয়া। এছাড়া আগামী দিনের অর্থনীতির প্রাণ কেন্দ্র এশিয়া। এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থরক্ষা করতে হলে আঞ্চলিক বিরোধ না মিটিয়ে তা উসকে দিতে হবে। ভারতকে দুধ-কলা খাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন এটাই বোঝাতে চায় যে নয়াদিল্লির বড় হুমকি হল বেইজিং। ভারত-চীনের মধ্যে কথিত দ্বন্দ্বটা যতক্ষণ জিইয়ে রাখা যাবে, ততক্ষণ মার্কিন স্বার্থ নিরাপদ। পশ্চিমা মিডিয়ার হেডলাইনও তাই দ্বন্দ্বগুলোকে হাইলাইট করে। ভারত ও চীন দুই দেশকেই উপলব্ধি করতে হবে এটা ফাঁদ ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ফাঁদে পা দেয়া মানে হল, নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারা। এটা ঠিক যে, নয়াদিল্লি-বেইজিংয়ের কিছু বিষয়ে বিরোধ রয়েছে। কিন্তু তার চেয়ে বড় দুই দেশের স্বার্থ। একে অপরের পায়ে পারা দেয়ার নীতির চেয়ে সহযোগিতার নীতি নিলে দুজনই উন্নত হবে। আগামী দিনের বিশ্ব রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা রাখে ভারত-চীন। তিন বছর আগেও ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ছিল চীন এবং প্রতিরক্ষার জোগানদাতা ছিল রাশিয়া। ভারতের ডিএনএর সঙ্গে পশ্চিমা সম্প্রীতি বেমানান। এশিয়ার এই উত্থান মুহূর্তে আঞ্চলিক রাজনীতি কেমন হবে তা নির্ধারণের গুরুভার এখন চীন-ভারতের- পরস্পরবিরোধী নাকি পারস্পরিক সম্প্রীতি তা ফিরে দেখার সময় এসেছে। নাকি পশ্চিমা ফাঁদে পা দিয়ে শরিকে শরিকে শত্র“তা করবে, সেই সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে এশিয়ার ভবিষ্যৎ। সূত্র : গ্লোবাল টাইমস, পিপলস ডেইলি, দ্য হিন্দু।
Advertisement