ঈদুল আযহা উপলক্ষে হবিগঞ্জে খামারিরা গরু লালন পালনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গরুর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তারা প্রতিদিনই বাড়তি খাবার দিচ্ছেন। ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনায় এবার দেশি গরু পালনে খামারিদের মাঝে উৎসাহ দেখা গেছে।আনোয়ারপুর বাইপাস রোডের খামারি শাহাব উদ্দিন জানান, ইনজেকশন বা ট্যাবলেট দিয়ে গরু মোটা করা হলে এটি বেশি দিন টেকেনা। নির্দিষ্ট সময়ের পর মারা যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গরু বিক্রি হয়নি। তখন যদি ওই গরুটি মারা যায় তবে বছরের লাভ তো শেষই উপরন্তু পুঁজিও শেষ হয়ে যায়। তাই ক্ষতির চেয়ে লাভ কম হওয়াও ভাল। এজন্যই তারা মোটাতাজাকরণে ইনজেকশন বা ট্যাবলেট ব্যবহার করেন না।নারায়ণপুর গ্রামের খামারি বারিন্দ্র গোপ বলেন, হাইব্রিড গরু এখন মানুষ চিনে ফেলে। এর প্রতি মানুষের চাহিদা একেবারেই নেই। এছাড়া এটি তুলনামূলক দুর্বলও হয়। দেশীয় গরু পালনে কোনো ঝুঁকিও নেই। গরুর খাবার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুদ (দানা দানা ভাঙা চাল) সিদ্ধ, ভুষি, খৈল, লবণ পানি, বিচালি এসবই তাদের খাওয়ানো হয়। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে মাঝে মাঝে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হয়।এ ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এজেডএম ওয়াহিদুল আলম জানান, ক্রেতাদের মাঝে দেশীয় গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় খামারিরা তা পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময় মোটাতাজা করে অনেককেই ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জেলার প্রায় ২৫০টি খামারের মালিক গরু লালন পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রয় করে এনে মজুদ করতে শুরু করেছেন। গত বছর দেশের বাইরে থেকে গরু আসায় অনেককেই ব্যবসায় ক্ষতি গুণতে হয়েছে। তবে এ বছর ভারতীয় গরু না এলে তা পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন বলে প্রত্যাশা তাদের। প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলায় ছোট বড় মোট ৮০টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে আনোয়ারপুর, নারায়ণপুর, জালালাবাদ, ছোট বহুলা, রিচিসহ কয়েকটি গ্রামে এসব খামার রয়েছে। আর জেলায় খামার আছে প্রায় ২৫০টি। প্রতিটি খামারেই দেশীয় পদ্ধতিতে গরু পালন করা হচ্ছে। দেশীয় গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জেলায় দিনে দিনে আরো খামারের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা ব্যক্ত করেন প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা।এসএস/পিআর
Advertisement