কয়লার আগুনে তেঁতে ওঠা লাল টকটকে লোহায় হাতুড়ি দিয়ে ইচ্ছামতো পেটাচ্ছেন তারা। লাল রঙ ফিকে হয়ে এলে পানিতে ভিজিয়ে আবারও পেটানো। কেউ আবার শান দিচ্ছেন ছুরি-চাপাতি। ঝিনাইদহের কামার পল্লীগুলোর এখনকার নিয়মিত দৃশ্য এটি।লোহা, কয়লা ও শ্রমের মূল্যবৃদ্ধি এবং পুঁজির অভাবে বছরের অন্য সময় ব্যবসা ভাল করতে না পারলেও এই সময়টাতে কোনো দিকে তাকানোর ফুরসত নেই তাদের। সারা বছরের কর্মহীন ক্ষতি তারা পুষিয়ে নিতে চান এই কয়েক দিনে। আর তাই কামার পল্লীর কারিগররা ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে রাত দিন কাজ করছেন। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের দা, ছুরি ও চাপাতি তৈরি এবং মেরামতের কাজ। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ৬৭ ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ কামার এখন এমনই ব্যস্ত সময় পার করছেন।কামার সুবল কর্মকার জানালেন, ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে তাদের অস্ত্র তৈরির চাপ ততো বাড়বে। কিন্তু এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামাররা পড়েছেন সমস্যায়। গত বছর লোহার কেজি ছিল ১৫০ টাকা। এ বছর তা কিনতে হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। এছাড়া আগে যেখানে ২০-৩০ টাকায় এক বস্তা কাঠ কয়লা পাওয়া যেত, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। কাজেই বাধ্য হয়ে আমাদের দাম বাড়াতে হচ্ছে।কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কামার সম্প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করছে।ঝিনাইদহ হাটের রাস্তার কামার সৌমেন কর্মকার জানান, একমাত্র সহজ শর্তে ঋণ দিলেই আমাদের টিকে থাকার পথ তৈরি হবে। অন্যথায় এ শিল্প খুব শিগরিরই হারিয়ে যাবে।এফএ/পিআর
Advertisement