চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বাজারে চামড়া প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত লবণের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ৬০০ থেকে ৬৫০ কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।জানা গেছে, কোরবানিতে পশুর চামড়া প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত লবণের বাড়তি চাহিদা থাকে। তাই অতিরিক্ত লবণ আমদানি করে সরকার। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও চামড়া সংরক্ষণে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হয়নি। তাই প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে চামড়া প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত লবণের দাম। চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ খাতে সারা বছর প্রায় ৬০ হাজার টন লবণ দরকার হয়। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টন ব্যবহার হয় কোরবানির মৌসুমে। এ সুযোগে লবণের দাম বাড়িয়ে দেন একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।সূত্র জানায়, চামড়া প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত লবণের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হওয়ায় সরকার চলতি বছর দেড় লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু এখনো এ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এজন্য সিন্ডিকেটকেই দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে কোরবানির আগে এমন সংকটের কারণে বিপদে পড়েছেন ট্যানারি মালিকরা। তাদের আশঙ্কা, সংরক্ষণের অভাবে এ বছর নষ্ট হতে পারে ৪০ শতাংশ চামড়া।এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্লাহ জানান, লবণের চড়া দাম অব্যাহত থাকলে কোরবানির প্রায় ৪০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার বাজার মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৬০০ থেকে ৬৫০ কোটি টাকা।তিনি বলেন, এই চামড়া নষ্ট হলে পুরো বছরের চাহিদা মেটাতে কষ্ট হবে।চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের অব্যাহত দরপতনের অজুহাতে এবারও চামড়ার দাম কমানোর চিন্তা করছেন ব্যবসায়ীরা। সে রকম হলে এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।গত বছর প্রতিটি ৭৪ কেজি লবণের বস্তার দাম ছিল ৬৫০ টাকা। কিন্তু এ বছর সেই লবণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকায়।সূত্র জানায়, লবণের সবচেয়ে বড় জোগান আসে কক্সবাজার থেকে। কিন্তু উৎপাদন কমে যাওয়ায় ঘাটতির কথা জানানো হয়েছিল সরকারকে। এরপর দেড় লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতিও মিলেছে। কিন্তু এখনো সে প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। কোরবানির মাসখানেক আগে লবণ কিনে মজুদ রাখেন কিছু ব্যবসায়ী। কিন্তু এবার কোনো আড়তেই প্রস্তুতি চোখে পড়েনি।এ বছর কোরবানিতে ৬০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। একটি গরুর চামড়ায় লবণের প্রয়োজন হয় গড়ে ১০ কেজি। আর ছাগলের ক্ষেত্রে আড়াই কেজি।এমইউএইচ/এএইচ/আরআইপি
Advertisement