দেশজুড়ে

ষাঁড়ের দাম ১৫ লাখ টাকা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আসন্ন ঈদু-উল আযহায় বিক্রির উদ্দেশ্যে এক ষাঁড়ের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। উপজেলার ৫নং বানাইল ইউনিয়নের ভাবখণ্ড বাজারের পূর্ব পাশের বানাইল গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. শাহানুর মিয়া (৬০) ষাঁড়টির মালিক। গরু মোটাতাজাকরণে কোনো প্রকার হরমোন বা ইনজেকশন ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে লালিত পালিত কালো রংয়ের এই ষাঁড়টির ওজন প্রায় এক টন। স্থানীয় গরু বেপারিদের ধারণা, এই ষাঁড়টিই এ বছর হয়তো জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড়। কৃষক শাহানুর মিয়া এই বিশাল আকৃতির ষাঁড়টির দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। একনজর ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে তার বাড়ি ভিড় জমাচ্ছে শত শত মানুষ।    সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ষাঁড়টিকে কৃষক শাহানুর মিয়া ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম গোয়ালঘরে ফ্যানের নিচে রেখেছেন এবং সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন।কৃষক শাহানুর মিয়া জানান, গরু লালন পালন করা তার শখ। তার বয়স যখন ১২ বছর তখন থেকেই তিনি গরু লালন পালন করে আসছেন। গরু লালন পালন যেন তার নেশা ও পেশা হয়ে উঠেছে। পারিবারিকভাবে তিনি সচ্ছল না হলেও গরুর প্রতি তার আলাদা একটা দরদ রয়েছে। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি পালের দেশি সিন্দি জাতের একটি ষাঁড় পালন করে আসছেন। ষাঁড়টি তিনি নিজের সন্তানের মত লালন পালন করেন। ষাঁড়টি ঘিরেই এখন তার সব। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি ষাঁড়টির খাবারসহ আদর-যত্ন করে থাকেন। ষাঁড়টিকে তিনি দেশীয় খাবার খাওয়ান। এর খাদ্য তালিকায় রয়েছে- ঘাস, লতাপাতা, খড়, চিনি, গুড়, কলাসহ বিভিন্ন ধরনের ছোলা, ডাল, খৈল, ভুসি, কিসমিস, আম ও ভাতের মার। গত পাঁচ বছরে ষাঁড়টির কোনো অসুখ হয়নি। তারপরও টাঙ্গাইলের পশু চিকিৎসক ডা. মো. আফাজ উদ্দিনকে বাড়ি ডেকে এনে ষাঁড়টির বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়েছেন তিনি। এছাড়া ষাঁড়টিকে মোটাতাজাকরণের জন্য কোনো হরমোন বা ইনজেকশন দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। ষাঁড়টি লালন পালন করতে গত পাঁচ বছরে তার শ্রমসহ খরচ হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। গত বছর কোরবানির সময় এটি বিক্রির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। বেপারিরা দাম বলেছিলেন ৫ লাখ টাকা। তেমন লাভ না হওয়ায় তিনি ষাঁড়টি গত বছর বিক্রি না করে বাড়িতে রেখে দেন।এ ব্যাপারে কৃষক শাহানুর মিয়া ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম আরো জানান, ষাঁড়টি লালন পালন করতে গত পাঁচ বছরে তাদের প্রচুর টাকা দেনা হয়েছে। এলাকাবাসী, কয়েকটি এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ষাঁড়টি তারা লালন পালন করেছেন। এখন তারা প্রায় সর্বস্বান্ত। এ বছর ঈদুল আজহায় ষাঁড়টি বিক্রির জন্য তারা দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে বেপারিরা তার বাড়ি আসতে শুরু করেছেন। অনেকেই বিভিন্ন দাম করছেন বলে জানান শাহানুর মিয়া। সাধারণ বেপারিদের চেয়ে শিল্পপতি, সরকারের কোনো উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা বা এমপি ও মন্ত্রীদের কাছে ষাঁড়টি বিক্রি করার ইচ্ছা কৃষক শাহানুর মিয়ার।  আরিফ উর রহমান টগর/এআরএ/আরআইপি

Advertisement