মতামত

নৌপথে অচলাবস্থার অবসান হোক

নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌপথের গুরুত্ব অপরিসীম। নৌপথে ভ্রমণ, পণ্য পরিবহন অপেক্ষাকৃত সহজ ও সস্তা। কিন্তু দখল-দূষণে নদীগুলো মৃতপ্রায়। এ কারণে  দিন দিন কমে যাচ্ছে নৌপথ। এরই মধ্যে যতোটুকু টিকে আছে সেই নৌপথ রক্ষা করারও যেন কেউ নেই। বিশেষ করে নৌযান শ্রমিকদের ভালোমন্দ দেখার লোকের অভাব। তা নাহলে ধর্মঘট ডেকে সবকিছু অচল করে দিয়ে তারা দাবি আদায়ে নামতে বাধ্য হবে কেন। সর্বনিম্ন বেতন ১০ হাজার টাকা করাসহ ১৫ দফা দাবিতে ধর্মঘটে গেছে নৌযান শ্রমিকরা। এর আগেও মজুরি বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে  নৌযান শ্রমিকেরা দেশব্যাপী ধর্মঘট শুরু করে। কিন্ত অচলাবস্থা নিরসনে কেউ দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসেনি। এবারের ধর্মঘট অনেকটা আকস্মিক। ফলে দুর্ভোগের মাত্রাও বেশি। যাত্রীরা সদরঘাটে গিয়ে ফিরে আসছে। আগে থেকে তারা ধর্মঘটের খবর জানতো না। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে অচলাবস্থা নিরসনে কেউ দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসছে না। নৌপরিবহন মন্ত্রীও মালিকদের ওপর দায় চাপিয়েই তার দায়িত্ব শেষ করছেন। মালিকরা দোষ দিচ্ছেন শ্রমিকদের। এই অবস্থা চলতে থাকলে অচলাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হতে বাধ্য। অথচ অবিলম্বে এই অচলাবস্থার নিরসন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। শ্রমশোষণের এ দেশে নৌযান শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত। অধিকাংশ মালিক নৌশ্রমিকদের ক্ষেত্রে আইএলও কনভেনশন মানেন না। তাদের মজুরি কাঠামো ঠিক নেই। ন্যূনতম মজুরিও নির্ধারণ করা নেই। ঝড়-ঝঞ্ঝাসহ নানা ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হলেও নেই কোনো ঝুঁকি ভাতা। এছাড়া চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ অন্যান্য অসুবিধা তো রয়েছেই।  কথা হচ্ছে, ধর্মঘটে কোনো পক্ষেরই লাভ হচ্ছে না। ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় আলোচনা করে এসব সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করতে হবে। জনস্বার্থে কোনো পক্ষেরই এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিক হবে না।এইচআর/এবিএস

Advertisement