বিশেষ প্রতিবেদন

জবি থেকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদকে মনোনীত সুবীর বিসিএসে ৫৩তম

সদ্য প্রকাশিত ৩৫তম বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুবীর দাশ জাতীয় মেধায় ৫৩তম হয়েছেন। তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী যিনি ২০১৪ সালের প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণ পদকের জন্য মনোনীত হন। প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত সুবীর দাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে অনুপ্রেরণার অগ্রদূত হিসেবে পরিণত হয়েছেন।জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে সুবীর দাশ বলেন, “জীবনে সফলতার মূল হলো সৎ থাকা”। তিনি জানান, স্বপ্ন ছিল বাবা নিরঞ্জন কুমার দাশের মতো শিক্ষক হওয়া। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ফলে নতুন করে শুরু করেন পথচলা। অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের ফল স্বরূপ পেয়েছেন কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার।যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ঘুঘুদহা গ্রামে জন্ম সুবির দাশের। বাবা স্কুলশিক্ষক, মা গৃহিণী। প্রথম অবস্থায় মা চাকরি করলেও পরে সন্তানদের ভবিষতের কথা চিন্তা করে চাকরি ছেড়ে দেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট সুবীর। জন্ম যশোর হলেও বেড়ে ওঠা বাগেরহাটে। প্রাথমিকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করেন তিনি।যশোরের গোপারপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) পান তিনি। ২০০৫ সালে যশোর জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু এইচএসসির রেজাল্ট পাওয়ার পর ব্যথিত হন তিনি। কারণ এইচএসিতে পান জিপিএ-৩.৯০। তবে থেমে থাকেননি তিনি। ভর্তি হন দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে।বাবার মতো শিক্ষক হবার স্বপ্ন নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এরই ধারাবাহিকতায় স্নাতকে সিজিপিএ ৩.৮৬ নিয়ে প্রথম হন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে মাস্টার্সে গবেষণা করেন। ‘Disaster Mitgationa of southern part of Bangladesh’ বিষয়ে গবেষণা করে মাস্টার্সেও ভালো ফল করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে না পেরে নতুন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। যে করেই হোক ক্যাডার হতে হবে বলে প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। একটানা পড়ালেখা চালিয়ে যান। কোনো কোচিংয়ে ভর্তি না হয়েও যে ভালো ফলাফল করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সুবীর। তিনি জানান, বিসিএস প্রিলিমিনারি পরিক্ষার আগে দৈনিক ১০ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেছেন। প্রিলিতে টেকার পর পড়ালেখা বাড়িয়ে দেন। লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে ১৪ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেন।ভবিষৎ ক্যাডারদের উদ্দেশে সুবীর দাশ বলেন, জীবনের সফলতা অর্জন করতে হলে আগে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। তারপর নিজেকে সেই লক্ষ্যে সম্পূর্ণরূপে নিবেদন করতে হবে। কঠোর পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। ভেঙে পড়া যাবে না। স্বপ্ন দেখলেই শুধু হবে না, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দান করতে হবে।তিনি বলেন, সিলেবাসের টপিক ধরে পড়তে হবে, অপেক্ষাকৃত কঠিন অংশ বাদ দিলে ভালো হয়। বুঝে পড়তে হবে। সাধারণ জ্ঞান, গণিত ও ইংরেজিতে বেশি সময় দিতে হবে। সব বিষয়ে পুরোপুরি ধারণা রাখতে হবে। বিশ্ব সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরি।তার স্বপ্ন তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাবেন তিনি। দেশের জনগণের সেবা নিশ্চিত করাই তার মূল লক্ষ্য বলে জানান এই স্বপ্নবাজ তরুণ।এসএম/বিএ

Advertisement