জাতীয়

রাতে বাঁচার আকুতি, সকালে না ফেরার দেশে

‘‘আমি বাঁচতে চাই। আমি মইরা গেলে আমার পরিবার না খাইয়া মরবে। আমার বাচ্চারা এতিম হয়ে যাবে। এমন কেউ দরদি ডাক্তার নাই, আমারে বাঁচান, আমারে বাঁচান, আমি বাঁচতে চাই!’’বৃহস্পতিবার রাতে এভাবেই বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন বগুড়ায় দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া ট্রাকের হেলপার আব্দুর রহিম।আব্দুর রহিম হয়তো বুঝেছিলেন তিনি আর বাঁচবেন না। আর সে কারণেই পরিবারের কথা ভেবে আত্মচিৎকারে প্রকম্পিত করেছিলেন হাসপাতালের বার্ণ ইউনিট।বগুড়ার নুনগোলায় বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ ট্রাকের হেলপার আবদুর রহিম (৩০) মারা গেছেন।ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান তিনি। রহিমের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে।শুক্রবার সকালে পৌনে ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, সাদা কাপড়ে ঢেকে রাখা হয়েছে আব্দুর রহিমের মরদেহ।ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, শ্বাসনালীসহ তার শরীরের ৩৩ শতাংশ পুড়ে যায়। শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়া রোগী সাধারণত বাঁচে না। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ভালো চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার।তিনি বলেন, এখনো পরিবারের বা নিকটস্থ কোনো আত্মীয়স্বজনকে আমরা দেখতে পাইনি। তাই লাশের ময়না তদন্ত করতে দেরি হবে।তিনি আরও জানান, ওইদিন একই সাথে ট্রাকে থাকা দগ্ধ ফার্নিচার ব্যবসায়ী সাজু মিয়ার (৪০) চিকিৎসা চলছে।এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আবুল বাসার জাগোনিউজকে জানান, বগুড়া থেকে ফার্নিচার নিয়ে ঢাকায় উদ্দেশে রওয়ানা দেয় একটি ট্রাক।বগুড়া-নামুজা সড়কের নুনগোলায় পৌঁছলে রাত ৮টার দিকে ট্রাকটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় অবরোধ-হরতাল সমর্থকরা।সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। এতে চালক টিটন মিয়া (৩৬), হেলপার রহিমসহ তিনজন দগ্ধ হন। ট্রাকটির অধিকাংশই পুড়ে যায়। আহতদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।অবস্থার অবনতি ঘটলে হেলপার রহিম ও সাজু মিয়াকে শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে ট্রাকের হেলপার আব্দুর রহিম মারা ঢামেক হাসপাতালে মারা যান।জেইউ/এআরএস

Advertisement