খেলাধুলা

টোকিওকে অপেক্ষায় রেখে শেষ হলো রিও পর্বের

জমকালো সমাপনী অনুষ্ঠান ও টোকিওর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অলিম্পিকের পতাকা হস্তান্তরের মধ্যে দিয়ে পর্দা নামলো রিও অলিম্পিকের। এটি ছিল অলিম্পিক গেমসের ৩১তম আসর। ৩২তম আসর বসবে জাপানে। বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর ৫টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা চলে সমাপনী অনুষ্ঠান। নাচে-গানে-আনন্দ-উল্লাসে দারুণ সময় গেছে মারাকানা স্টেডিয়ামে। টেলিভিশনে পর্দায় যা উপভোগ করেছেন সারা বিশ্বের অগণিত ক্রীড়াপ্রেমী। যদিও সমাপ্তি কিংবা বিদায় কখনো হর্ষের নয়, বিষাদেরই। অলিম্পিককে বলা হয়ে থাকে ‘গ্রেটেস্ট শো আন আর্থ’; বহু আগে প্রাচীন গ্রিসের ঈশ্বরদের সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে এর সূত্রপাত। বলা হয়ে থাকে পুরানকথা, ঐতিহ্য, ইতিহাস সবই একাকার হয় এই অলিম্পিকে।এবারের অলিম্পিক কারো কাছে হতাশার, কারো কাছে উল্লাসের, আবার কারো আবেগেরও! এমন অনেক দেশ আছে যারা কোনো পদক ছাড়াই ব্রাজিল ছাড়ছে। আবার যুক্তরাষ্ট্র যেমন সবাইকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি সোনার পদক ঝুলিতে জমা করেছে। মার্কিনিদের জন্য তা নিশ্চয়ই উচ্ছ্বাসের।রিও অলিম্পিকের ৩০৭টি সোনার পদকের জন্য লড়েছে ২০৭টি দেশ। কমপক্ষে একটি করে হলেও সোনা জিতেছে এমন দেশের সংখ্যাও কম নয়। দুঃখের বিষয়, সেই দেশগুলোর মধ্যে নেই বাংলাদেশের নাম। ইতিহাস গড়ে সরাসরি অলিম্পিকে খেলতে যাওয়া গলফার সিদ্দিকুর রহমানও পারেননি নামের প্রতি সুবিচার করতে। তাই বিষাদের এক অলিম্পিক কাটলো ষোলো কোটি বাঙালির দেশটির।ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়াম থেকে সমাপনী অনুষ্ঠানে বর্ণিল মুহূর্তগুলো স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রিওর বাতি নেভানোর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে গেল ২০২০ টোকিও অলিম্পিকের কাউন্টডাউন। অপেক্ষা ১ হাজার ৪৩২ দিনের। রিও অলিম্পিকের সমাপনী অনুষ্ঠানে টোকিওর গভর্নরের হাতে অলিম্পিকের পতাকা তুলে দিয়েছেন আইওসি প্রেসিডেন্ট। স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও। আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১তম অলিম্পিকের সমাপ্তি ঘোষণা করলেন আইওসি প্রেসিডেন্ট টমাস বাখ।প্রথা অনুসারে পুরুষ ম্যারাথনে পদকজয়ী অ্যাথলেটদের হাতে পদক তুলে দেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট টমাস বাখ। সোনা জেতেন কেনিয়ার অ্যাথলেট লিযুড কিপচোগে। রুপা জেতেন ইথিওপিয়ার অ্যাথলেট ফেইসা লিলেসা। আর ব্রোঞ্জ জেতেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যালেন রুপ।মারাকানা স্টেডিয়ামে মায়াবি আলোর রোশনায় ভেসে ওঠে অলিম্পিকের পাঁচটি রিং; যা বিশ্বের সব জাতির মধ্যে ঐক্য বোঝায়। ৫ আগস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মতো সমাপনী অনুষ্ঠানেও শিল্পীদের পারফরম্যান্সে বারবার ফুটে ওঠে ব্রাজিলের সংস্কৃতি। তুলে ধরা হয় পৃথিবীর বিখ্যাত আমাজনের জঙ্গল। সাম্বার তালে তালে মাতলো মারাকানা স্টেডিয়াম। প্রায় ছয় হাজার শিল্পী রিও অলিম্পিকের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন। বিদায় রিও, এবার অপেক্ষা টোকিওর।এবারের অলিম্পিকের আসর নিয়ে শুরু থেকেই বেশ শঙ্কা ছিল। দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দেশে এবারই প্রথম বসলো অলিম্পিকের আসর। তবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জিকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, পানি দূষণ, বাজেট কাটছাঁট, সব মিলিয়ে প্রতি পদক্ষেপে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আয়োজক দেশ ব্রাজিলকে। এনইউ/এনএফ/এমএস

Advertisement