খেলাধুলা

অমরত্ব নিশ্চিত করেই বিদায় বোল্টের

মাইকেল ফেলপস ২৩টা সোনা জিততে পারেন, হতে পারেন গ্রেটেস্ট অলিম্পিয়ান; কিন্তু ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের রাজা স্প্রিন্টে টানা তিনটি অলিম্পিকে ৯টি সোনার মেডেল, কে কবে জিততে পেরেছে? ইতিহাস গড়া হয়েছে আগে থেকেই। ভবিষ্যতেও গড়া হবে। কিন্তু উসাইন বোল্ট যা করে দেখালেন, তা আদৌ ভাঙ্গা সম্ভব হবে কি না সন্দেহ।কিংবদন্তী হিসেবে ধরা হয় কার্ল লুইস আর পাভো নুরমিকে। অলিম্পিকের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে এই দুই অ্যাথলেটের নামের পাশে লেখা রয়েছে ৯টি করে স্বর্ণপদক। কিন্তু বোল্টের কাছে তো একেবারেই নস্যি। কার্ল লুইস আর নুরমিরা শুধুমাত্র স্প্রিন্ট দিয়ে নয়, সোনা জিতেছেন হাই জাম্প এবং দুর পাল্লার দৌড় থেকে; কিন্তু বোল্ট শুধুই স্প্রিন্ট থেকে। এমন ইতিহাস আর কে কবে করতে পারবে? রীতিমত অসম্ভব ব্যাপার। অলিম্পিক শুরুর আগেই তিনি বলেছিলেন, আমি গ্রেট নয়, গ্রেটেস্ট হতে চাই। তবে, ইনজুরি যেভাবে জর্জরিত করে ফেলেছিল উসাইন বোল্টকে, তাতে ভক্তরা শংকিতই ছিলেন তাকে নিয়ে। পারবেন তো বোল্ট? পারবেন সত্যিকার গ্রেটেস্ট হতে। টানা তিনটি অলিম্পিকে তিনটি সোরা পদক গলায় তুলে অমরত্ব নিশ্চিত করতে পারবেন তিনি!সব শঙ্কা দুর করে একে একে তিন অলিম্পিকের তিনটি ইভেন্টে টানা তিনটি সোনার পদক জিতে নিলেন জ্যামাইকান বজ্রমানব। সর্বশেষ শনিবার ভোরে নেমেছিলেন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের লড়াইয়ে। ১০০ মিটার রিলেতে। মার্কিন স্প্রিন্টারদের পেছনে ফেলেছিলেন। যদিও পরে তারা লাইন ভেঙ্গে অন্য লাইনে প্রবেশের কারণে ডিসকোয়ালিফায়েড ঘোষিত হলেন। সে সুযোগ রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ জিতলেন জাপান এবং কানাডার স্প্রিন্টাররা।সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবীদ হিসেবে ধরা হয়ে মার্কিন বক্সার মোহাম্মদ আলি এবং ব্রাজিল কিংবদন্তী পেলেকে। বোল্টের ইচ্ছে, এ দু’জনের কাতারে নাম লেখানোর। সেই নামটা কী লেখা হয়েছে, ইতিহাসই হয়তো বিচার করবে। কিন্তু বোল্ট তার কাজটা করে দেখিয়েছেন। ২০০ মিটার স্প্রিন্টের স্বর্ণ জয়ের পর বোল্ট সরাসরিই বলে দিয়েছেন, ‘আমিই সবার সেরা। বিশ্বের কাছে সেটা প্রমাণ করার জন্যই তো রিওতে এসেছিলাম। এই জন্যই বলেছিলাম এটাই আমার শেষ অলিম্পিক্স। কারণ আর কিছু প্রমাণ করা বাকি নেই।’১০০ মিটারের সোনা জয়ের পর বলা হচ্ছিল, অমরত্বের সন্ধানে বোল্ট। বাকি দুই ইভেন্টে সোনা জয় করতে পারলে সেই অমরত্বই হয়তো চলে আসবে। ২০০ মিটার এবং ১০০ মিটার রিলেতে বাকি দুই সোনা জয়ের পর সত্যি সত্যি অমরত্ব নিশ্চিত হয়ে গেছে বোল্টের। ২ হাজার বছরেরও বেশি সময়ের রেকর্ড ভেঙে ইতিহাসে অমর হয়ে গেলেন মাইকেল ফেলপস। একই সঙ্গে স্প্রিন্টে ৯টি সোনা জেতা, উসাইন বোল্টের নামও হয়ে গেলো অমর। মৃত্যুর পরও যুগ থেকে যুগান্তরে উচ্চারিত হবে তার নাম। লিওনিডাসের নাম ২ হাজার বছর পর এখনও যেভাবে উচ্চারিত হচ্ছে, ঠিক একইভাবে উচ্চারিত হবে বোল্টের নামও।আইএইচএস/আরআইপি

Advertisement