জাতীয়

অবরোধে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো

২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধে রাজধানীতে একের পর এক বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর ক্লাস। স্কুলের নিজস্ব পরিবহন সুবিধা বন্ধ করে দেয়ায় দিন দিন স্কুলমুখী শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে ব্যাপক হারে। শিক্ষকদের মধ্যেও যথাসময়ে সিলেবাস শেষ করতে না পারার শঙ্কা। এ অবস্থায় সহিংসতার পথ পরিহার করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানালেন শিক্ষামন্ত্রী।পাঠকক্ষের শূন্য বেঞ্চগুলোই জানান দিচ্ছে টানা অবরোধে কতটা বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, কতটা কমেছে স্কুলে যাওয়ার হার। কয়েকটি স্কুল পরিদর্শনে দেখা যায়, কোন শ্রেণীতেই শিক্ষার্থীদের বর্তমান সংখ্যা মোট সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বেশি নয়। তারপরও জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে যারা স্কুলে আসছে তারা নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকরাও ভুগছেন এমন আতঙ্কে।এ অবস্থায় স্কুলের এক শিক্ষিকা বললেন স্কুলে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কথা। তিনি বলছেন, `নিরাপত্তাজনিত কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কম। কোনো দিন একজন কোনো দিন মাত্র দু`তিনজন ক্লাসে আসছে। আসলে এ অবস্থায় আমরাও আতঙ্কিত। বাইরে বের হতে নিরাপত্তা বোধ করি না।`ঝুঁকি এড়াতে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিবহন সুবিধা বন্ধ করায় অপেক্ষাকৃত দূরের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা নিরাপত্তার কথা ভেবেই স্কুলে পাঠাচ্ছেন না সন্তানকে।একজন অভিভাবক বলছেন, `বাচ্চাকে স্কুলে পড়াতে এসে যদি তার লাশ নিয়ে ফিরতে হয় অথবা হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করতে হয় তাহলে আমাদের জন্য তো খুবই বেদনাদায়ক।`এই বাস্তবতায় অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তাদের শীতকালিন ছুটির সময়সীমা বাড়িয়েছেন। এভাবে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন গভীর সংকটে পড়বে বলেও আশঙ্কা তাদের।এ সম্পর্কে স্কুল অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ-এর মহাপরিচালক প্রফেসর ড. ইফফাত কায়েস চৌধুরী বলেন, যে শিক্ষার্থীরা বছর শেষে ছুটি পেয়ে বাড়ি গেছে তারা এখনো ফিরে আসতে পারেনি।এ ধরণের সমস্যার ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষের ক্লাসকোর্সগুলো সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ করতে হবে। যা শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।`এদিকে, সহিংস রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে ছিনিমিনি না খেলার আহ্বান জানালেন শিক্ষামন্ত্রী।শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, `মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে। ক্ষমতা দখলে মরিয়া হয়ে মানুষ হত্যার এই কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।`

Advertisement