বিশেষ প্রতিবেদন

দুই ডাক্তারের জন্য ঝুলে আছে হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলা

গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষী আদালতে হাজির না হওয়ায় শেষ হচ্ছে না ড.হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার বিচারকাজ। জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও তারা সাক্ষ্য প্রদানে আদালতে হাজির হননি। গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষী হলেন ডা. শহিদুল ইসলাম ও ডা. মেজর শওকত হাসান। ড. হুমায়ুন আজাদ আহত হওয়ার সময় ডা. শহিদুল ইসলাম সহকারী রেজিস্ট্রার (সিবিএ) হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্মরত ছিলেন।অপরদিকে ডা. শওকত সার্জিক্যাল বিশেষজ্ঞ হিসেবে সেই সময় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তারা দুজনই ড. হুমায়ুন আজাদের শরীরের জখমের পরীক্ষা করেন।মামলায় ডা. শহিদুল ৩৩ নং সাক্ষী এবং ডা. শওকত ৩৪ নং সাক্ষী। তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ২০১৫ সালের ১৯ মে সমন জারি করেন আদালত। পরবর্তীতে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য এ পর্যন্ত মোট ১৭ বার তারিখ নির্ধারণ করা হলেও হাজির না হওয়ায় ২০১৬ সালের ৫ জুন তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর এ পর্যন্ত তিনবার শুনানির তারিখ অতিবাহিত হলেও তারা আদালতে সাক্ষী দিতে হাজির হননি এবং পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদনও দাখিল করেনি।জানা গেছে, মামলায় ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৩৮ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। এখন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী দুই ডাক্তার সাক্ষ্য দিলেই মামলার কার্যক্রম শেষ করবে রাষ্ট্রপক্ষ।এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুই ডাক্তার মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। তারা সাক্ষী দিতে হাজির না হওয়ায় মামলাটি শেষ করতে পারছি না। তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মামলার ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাদের সাক্ষী দিতে আসতে হবে।’আলোচিত এই মামলাটি বর্তমানে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রয়েছে।উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন হুমায়ুন আজাদ। তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনার পরদিন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন।ওই হামলার পর হুমায়ুন আজাদ ২২ দিন সিএমএইচে এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসারত ছিলেন। পরে জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ১২ আগস্ট তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়।এ মামলায় জেএমবির শূরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক ও আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।মামলার আসামিরা হলেন- জেএমবির শূরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদ, নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু (পলাতক) ও সালাহউদ্দিন (পলাতক)।জেএ/এমএমজেড/এবিএস

Advertisement