বিনোদন

দেশিয় চলচ্চিত্র বাঁচাতে আন্দোলনের হুমকি

দেশে উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের ব্যানারে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলিরা। মঙ্গলবার দুপুরে বিএফডিসি চত্ত্বরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে দেশিয় চলচ্চিত্রের সব ধরণের কাজ বন্ধ রাখার আহবান জানিয়েছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। এছাড়া ২১ জানুয়ারি, বুধবারের মধ্যে উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্র দেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন বন্ধের ঘোষণা না দিলে কাফনের কাপড় পরে রাজপথে নামবেন এ সংগঠনটি। তাদের এ দাবি পূরণ না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন তারা।সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, কিছু অসাধু লোক যারা দেশকে ভালোবাসে না, দেশের সংস্কৃতিকে ভালোবাসে না, তারাই আমাদের ভাষাকে, আমাদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে উর্দু, হিন্দি সিনেমা বাংলাদেশে প্রদর্শন করতে চাচ্ছে। আমার বিশ্বাস সংস্কৃতিবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উর্দু, হিন্দি সিনেমা বাংলাদেশে প্রদর্শিত হতে দিবে না। তারপরও যদি সরকার উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমাদের কর্মসূচী চলবেই।পরিচালক সমিতির সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, যদি কোন দেশকে ধ্বংস করতে হয় তাহলে প্রথম তার ভাষা, সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে হবে। যেমনটা করা হয়েছিল ১৯৫২ সালে। আজও যারা অন্য ভাষার সিনেমা বাংলাদেশে প্রদর্শনের পায়তারা করছে, তারাও রাজাকার।চলচ্চিত্র শিল্প সমিতির সভাপতি শাকিব খান বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র মুক্তি দিতে দেওয়া যাবে না। আজ শুধু সরকারকে মাত্র জানান দেওয়া। এরপরেও যদি বন্ধ না হয়, তাহলে এর প্রতিবাদে আন্দোলন করা হবে। এ আন্দোলন শুধু আমরা নয় আমাদের সঙ্গে আছে ১৬ কোটি মানুষ। এর আগেও দেখেছেন- আমরা যখন প্রেসক্লাবে আন্দোলন করেছি, তখন শুধু চলচ্চিত্রের লোক ছিল না সঙ্গে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছিল।তিনি আরও বলেন, একটা সময় বাংলা চলচ্চিত্রের অনেক ভালো সময় ছিল। তখন ওরা আমাদের দেশে চলচ্চিত্র আমদানি করেননি। এখন কেন? আমাদের চলচ্চিত্র একটু খারাপ বলে? আমাদের যেসব চলচ্চিত্র ওদের দেশে রপ্তানি করার কথা চলছে তাতো অনেক আগের সিনেমা। বর্তমান সময়ের সুপার হিট সিনেমা তারা তাদের দেশে নিচ্ছে না কেন?পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান একজন দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ। এ সিনেমাটি বাংলাদেশে সেন্সর দেওয়া কোনোভাবেই আইন সংগত নয়। দুর্নীতিগ্রস্ত বলেই সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিয়েছেন। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন কিছু লোভী সিনেমা হল মালিকরা। যারা দেশিয় চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করছে। তাদর জন্যই আমাদের চলচ্চিত্রের অবস্থা খারাপ হচ্ছে।অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, জাতীর জনক এ দেশের ভাষা, সংস্কৃতি সর্ম্পকে সচেতন হওয়ায় আমাদেরকে বিএফডিসি করে দিয়েছিলেন। তারই কন্যা এখন ক্ষমতায়। তিনিও বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের জন্য অনেক করেছেন। তিনি কখনও উর্দু-হিন্দি সিনেমা বাংলাদেশে চলতে অনুমোদন দিবেন না বলেই আমার বিশ্বাস।তিনি আরও বলেন, আমি এও বিশ্বাস করি জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলা চলচ্চিত্রের এত বড় ক্ষতি করবেন না। আমাদের কথা তিনি রাখবেন। তবে তিনি যদি আমাদের কথা না শোনেন, পরের কথা পরে হবে।চিত্রনায়ক রুবেল বলেন, আমাদের দাবি যদি না মানা হয়, তাহলে শুধু রাজপথে নয় আমরা নিজেদের শরীরে পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালাব। আমাদের দাবি না আদায় করে ঘরে ফিরব না।অমিত হাসান বলেন, যারা আমাদের পেটে লাথি মারতে চায় আমারা তাদের পেটে নয় বুকে লাথি মারব। আমাদের দেশে উপমহাদেশীয় ভাষার সিনেমা প্রদর্শন করতে দেওয়া হবে না।সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন- চিত্রনায়ক ওমর সানি, জায়েদ খান, শাহরিয়াজসহ আরও অনেকে। এর আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের ব্যানারে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা বিএফডিসির প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন।আরএস

Advertisement