দেশজুড়ে

মারা গেছে ‘বঙ্গ বাহাদুর’

ভারতের আসাম থেকে বন্যার পানিতে ভেসে আসা দলছুট বন্যহাতি ‘বঙ্গ বাহাদুর’ অবশেষে মারা গেছে। হাতিটিকে বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে আনার পাঁচদিন পর মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টার সময় তার মৃত্যু হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা দাবি করলেও স্থানীয়দের অভিযোগ অতিরিক্ত চেতনানাশক এবং বন বিভাগের চিকিৎসায় গাফিলতির কারণেই মৃত্যু হয়েছে হাতিটির। গত ২৮ জুন ভারতের আসাম থেকে বন্যার পানিতে ভেসে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে দলছুট বন্যহাতিটি। এরপর ৪৫ দিন গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ এবং জামালপুর জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে বেড়ায় হাতিটি। হাতিটি উদ্ধারে গত ৪ আগস্ট ভারতের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল এসে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে তারা ৭ আগস্ট ভারত ফিরে যায়। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের উদ্ধার অভিযান প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামে হাতিটিকে ট্রাঙ্কুলাইজ করতে সক্ষম হয়। আর হাতিটি বন বিভাগ আটকের পর থেকে গত পাঁচদিন ধরে ওই গ্রামের খোলা মাঠের কাদা-জলে বেঁধে রাখা হয়। এ সময়ের মধ্যে খাদ্য সংকটে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে সোমবার সকালে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে হাতিটি। এরপর থেকেই ভেটেরিনারি সার্জনরা হাতিটি সুস্থ করে আবারো দাঁড় করানোর চেষ্টা করলেও সারাদিনে তা ব্যর্থ হয়। রাত থেকে শারীরিক অবস্থা আরো খারাপ হলে আজ ভোর সাড়ে ৬টায় মৃত্যু হয় হাতিটির। এদিকে স্থানীয় গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন, অতিরিক্ত চেতনানাশক ইনজেকশন প্রয়োগ করার ফলে হাতিটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে হাতিটি সুস্থ করতে গাফলতি করায় মারা যায়। হাতিটির মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, হাতিটি খাদ্য সংকট এবং মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। যে কারণে হাতিটি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভোর সাড়ে ৬টায় মারা যায়। তবে হাতির ময়নাতদন্ত শেষ হলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। হাতি উদ্ধার অভিযান দলের প্রধান ও সাবেক বন সংরক্ষক ড. তপন কুমার দে জানান, হাতিটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। তবে গাফিলতির কারণে ‘বঙ্গ বাহাদুর’ এর মৃত্যুর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন। শুভ্র মেহেদী/এসএস/এবিএস

Advertisement