ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনৈতিক সহিংসতা ও বলপ্রয়োগের অসুস্থ প্রতিযোগিতাকে অমানবিক ও নৃশংস উল্লেখ করে এর ফলে দেশে সুশাসন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথে ঝুঁকি বাড়ছে তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।একই সাথে এ পরিস্থিতিতে সকল প্রকার বলপ্রয়োগ, সহিংস ও অগণতান্ত্রিক আচরণ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমঝোতার পথ অনুসন্ধানের আহবান জানিয়েছেন তিনি।বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণতন্ত্রের নামে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক পক্ষ শক্তি প্রদর্শন ও বল প্রয়োগের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ায় শিশু, নারী ও তরুণসহ সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার নিষ্ঠুরভাবে খর্ব হচ্ছে। জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে শুরু করে স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার ভূলুন্ঠিত হচ্ছে। এক পক্ষ যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে, অন্য পক্ষ যেকোন প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে জনগণ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করছেন। রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব ভূলুন্ঠিত হচ্ছে। যা দেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের সম্ভাবনার জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ।তিনি বলেন, জনসভা, মিছিল ও মানববন্ধনসহ সকল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সকল নাগরিক ও সংগঠনের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে আন্দোলনের নামে একদিকে সহিংস কর্মসূচি এবং অন্যদিকে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের মতো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক আইনের ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবার হুমকি যেমন লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী তেমনি রাজনৈতিক অঙ্গনে উগ্র অগণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশের চাবিকাঠি।ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় দুই নেত্রীর মধ্যে পারস্পারিক সমঝোতা অর্জন অত্যন্ত জরুরি। সংকট থেকে উত্তরণের চাবিকাঠি দুই নেত্রীর হাতেই রয়েছে। একইসাথে উভয় পক্ষের নেতৃস্থানীয় অবস্থানে অধিষ্ঠিতজনদের সংহত ও দায়িত্বশীল আচরণ অপরিহার্য। তাঁদের রাজনীতি যে বাস্তবেই জনগণের স্বার্থে, জনগণের অধিকার খর্ব করার জন্য নয়, জনগণকে জিম্মি করে শক্তি পরীক্ষার জন্য নয়, তার প্রমাণ দেবার সময় এখনই।তিনি বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে শুধু পেছনে ঠেলে দিচ্ছে তাই নয়, বরং সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চার অভাবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আজ অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে রাজনীতিকে এক বিভৎস রূপে তুলে ধরে রাজনীতি বিমূখতার বীজ বপন করা হচ্ছে।রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের কর্মকান্ড উগ্র, সহিংস এবং অগণতান্ত্রিক শক্তিকে আরো বিকাশের সুযোগ করে দেবে উল্লেখ করে তিনি দেশের স্বার্থে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশেষ করে বড় দুটি দলকে সমঝোতা ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের আহবান জানান তিনি।-এসআর/আরএস
Advertisement