মতামত

বঙ্গবন্ধু ও কৃষি

যত দিন রবে পদ্মা মেঘনা যমুনা গৌরি বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার গর্বিত নাগরিক আমরা। ত্রিশ লাখ জীবনের বিনিময়ে প্রাপ্ত এ বাংলাদেশকে সোনালি ফসলে ভরপুর দেখতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সে কারণেই স্বাধীনতার পর তিনি ডাক দিয়েছেন সবুজ বিপ্লবের। তার প্রণীত এ পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে সবুজায়িত হবে সারা বাংলা, সুখে থাকবে বাংলার মানুষ। স্বাধীনতা উত্তর বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেগুলো সুষ্ঠু বাস্তবায়িত হলে আমরা অনেকটুকু এগিয়ে যেতে পারব কৃষি উন্নয়নে সমৃদ্ধিতে সফলতায়। আর কৃষি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের দেশও উন্নত হবে, হবে স্বনির্ভর।সার্বিক কৃষিকে কীভাবে বঙ্গবন্ধু দেখতেন এবং এর সমৃদ্ধির জন্য তার মনোভাব কেমন ছিল এ কথার জবাবে বলা যায়Ñ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় তিনি দেখতে চেয়েছিলেন দেশের কৃষি ও কৃষকের সর্বাঙ্গীন উন্নয়ন এবং স্বনির্ভরতা। বঙ্গবন্ধুর সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পুরো দায়িত্ব এখন আমাদের সবার। কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্যবিমোচনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় করাই হোক আমাদের চলমান অঙ্গীকার। সুতরাং আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কৃষিই হচ্ছে আমাদের এ অঙ্গীকার পূরণের প্রধান বাহন। ১৯৭৩ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহে বঙ্গবন্ধু বিশেষ ভাষণ দিয়েছিলেন। সে ভাষণে তিনি কৃষি বিপ্লবের কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে। কেননা গ্রামই সব উন্নয়নের মূল কেন্দ্র। গ্রামের উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যখন বেগবান হবে তখন গোটা বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সন্মুখপানে। তার অদম্য ইচ্ছা ছিল যে কোনো উপায়ে কৃষকের স্বার্থরক্ষা করা। কেননা কৃষকই এদেশের আসল নায়ক যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের সবার অন্ন জোগায়। কৃষকের চলমান, চাহিদা যথোপযুক্তভাবে নিশ্চিত করতে পারলে কৃষক অনেক আগ্রহে স্বতঃস্ফূর্ততায় কৃষিতে নিজেকে বিনিয়োগ করতে পারবে, উন্নয়নের জোয়ার বইবে। কৃষকের উন্নয়ন হলে দেশের উন্নয়ন সময়ের ব্যাপার। বঙ্গবন্ধু ভাবতেন এত দিন আমরা শোষণে নিষ্পেষণে আমাদের মেধা প্রতিভাকে কাজে লাগাতে পারিনি, এখন সময় এসেছে নিজেদের দেশে নিজেদের জ্ঞান মেধা দক্ষতাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। আমরা তখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারব এইতো আমার স্বনির্ভর সোনার বাংলাদেশ।সামগ্রিক কৃষি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর বৃহৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেছেন সবার আগে দরকার আমাদের টোটাল জরিপ। জরিপ ছাড়া কোনো পরিকল্পনাই সফল হবে না। সেজন্য সব কাজ করার আগে আমাদের সুষ্ঠু জরিপ করতে হবে। জরিপের ওপর ভিত্তি করে আমাদের সার্বিক পরিকল্পনা করতে হবে। আমাদের আর্থসামাজিক কারণে দেশে দিন দিন জমির বিভাজন বেড়ে চলছে। যদি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলা না যায় তাহলে আমাদের কৃষি উন্নয়ন ব্যাহত হবে, আমরা আমাদের কাক্ষিত উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব না। আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ব। কোঅপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে আগাতে পারলে আমাদের কৃষির উৎপাদন এবং সার্বিক উন্নয়ন দুটিই মাত্রা পাবে। অধিক শস্য উৎপাদনের জন্য আমাদের সবার সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। মাঠের ফসল, গবাদিপশু, মাছ পরিবেশ সব কিছুর মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় করতে হবে। তা না হলে আমরা কাক্ষিতভাবে এগোতে পারব না। মানুষকে অধিক মাত্রায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। বিশেষ করে কৃষি শিক্ষা কৃষি অভিজ্ঞতা আর জ্ঞানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিক্ষিত করতে হবে। তখন এমনিতেই আমাদের উন্নয়ন বেগবান হবে। আরেকটি কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধুÑ গ্রামের কৃষক অনেক অভিজ্ঞ অনেক দক্ষ। তাদের সাথে শেয়ার করে সমন্বয় করে আধুনিক কৃষিতে এগোতে হবে। তবেই আমরা আমাদের কাক্ষিত সফলতা পাব অনায়াসে। মানুষের ওপর জোর করে কিছুই চাপিয়ে দেয়া যাবে না এটি খুব ভালো করে জানতেন বঙ্গবন্ধু। তাইতো তিনি বলেছেন করে দেখাতে হবে, এতে কৃষক নিজে নিজে শিখে নিজের আঙিনায় বাস্তবায়ন করবে। এক গ্রামের ২০ জনকে একসাথে ক্ষেতখামারে হাতেকলমে কাজ দেখালে পাশের অন্য কৃষক দেখে দেখে নিজের জমিতে বাস্তবায়ন করলে উৎপাদন বেড়ে যাবে। তখন সারা বাংলার অন্যরা এগিয়ে আসবে সম্পৃক্ত হবে উন্নয়নের মূলধারায়। কেননা আমাদের কৃষক দেখে বিশ্বাস করতে অভ্যস্ত। তিনি কৃষিবিদদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা যারা কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন আপনাদের গ্রামে গিয়ে কৃষকের সাথে মিশে যেতে হবে, মনোযোগ দিতে হবে তাদের চাহিদা আর কর্মের ওপর, তবেই তারা সাহসী হবে, আগ্রহী হবে, উন্নতি করবে। ফলবে সোনার ফসল ক্ষেত ভরে। আপনারা এখন শহরমুখো হওয়ার কথা ভুলে যান। গ্রাম উন্নত হলে দেশ উন্নত হবে, তখন আপনারা আপনা-আপনি উন্নত হয়ে যাবেন। গ্রামভিত্তিক বাংলার উন্নতি মানে দেশের উন্নতি, আর আপনাদের উন্নতি তখন সময়ের ব্যাপার। শহরের ভদ্রলোকদের দিকে তাকিয়ে আপনাদের চিন্তা বা আফসোস করার কোনো কারণ নেই। কেননা গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের দিকে আমাদের সবার ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। কৃষক বাঁচাতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে, তা নাহলে বাংলাদেশ বাঁচতে পারবে না।অনেকের আগ্রহ থাকতে পারে কৃষি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অর্থ বরাদ্দ কেমন ছিল। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন উৎসবে ১৩/২/৭৩ তারিখে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন...খাদ্য বলতে শুধু ধান, চাল, আটা, ময়দা আর ভুট্টাকে বুঝায় না বরং মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাকসবজি এসবকে বুঝায়। সুতরাং কৃষি উন্নতি করতে হলে এসব খাদ্য শস্যের উৎপাদন উন্নতি করতে হবে। ১৯৭২-৭৩ সালে ৫০০ কোটি টাকা উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ ছিল এর মধ্যে ১০১ কোটি টাকা শুধু কৃষি উন্নয়নের জন্য রাখা হয়েছিল। এতে তখন থেকেই কৃষির প্রতি, কৃষি উন্নয়নের প্রতি তার যে আন্তরিকতা প্রকাশ পায়। বঙ্গবন্ধু ভাবতেন সবার আগে দরকার খাদ্যের। খাদ্যের নিশ্চয়তা না দিতে পারলে সব উন্নয়ন কার্যক্রম বিফলে যাবে। সুতরাং নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে হবে। সবুজ বিপ্লবের কথা বঙ্গবন্ধু বলতেন। কিন্তু তিনি এও বলতেন, সবুজ বিপ্লবের কথা শুধু মুখে বললেই চলবে না। এর সাথে যেসব সমস্যা আছে সেগুলোকে যাচাই-বাছাই করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। তবেই সবুজ বিপ্লব সফল হবে।প্রাতিষ্ঠানিক কৃষি উন্নয়ন তথা কৃষি এবং কৃষকের কথা ভেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনগণের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্তির লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নের বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কৃষির দূরদর্শিতাকে অসামান্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। এ কারণেই তিনি কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পুনর্সংস্কার, উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, ইক্ষু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন। কৃষি বিষয়ক বিদ্যমান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো ও কার্যক্রমের আমূল পরিবর্তন ও সংস্কারের মাধ্যমে এবং প্রযুক্তি চর্চায় মেধা আকর্ষণের যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। জাতির জনক বলেছেন খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আমাদেরই উৎপাদন করতে হবে। আমরা কেন অন্যের কাছে খাদ্য ভিক্ষা চাইব। আমাদের উর্বর জমি, আমাদের অবারিত প্রাকৃতিক সম্পদ, আমাদের পরিশ্রমী মানুষ, আমাদের গবেষণা সম্প্রসারণ কাজে সমন্বয় করে আমরা খাদ্যে স্বয়ংভরতা অর্জন করব। এটা শুধু সময়ের ব্যাপার। আরেকটি কথা বঙ্গবন্ধু সব সময় বলতেন আমাদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমাদের উৎপাদন আমাদের সুখশান্তি সব বিপন্ন হবে। সুতরাং যে করেই হোক আমাদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।কৃষি উপকরণে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনা যা ছিল আজ এত বছর পরেও আশ্চর্য হতে হয়। কৃষিশিক্ষা, মানসস্মত বীজ উৎপাদন এবং বিতরণ, সুষ্ঠু সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা, কৃষিতে ভর্তুকি, বালাই ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনা, খামারভিত্তিক ফসল ব্যবস্থাপনা, সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদ, ভেঙে যাওয়া অর্থনীতি পুনর্গঠন, মিল্কভিটা পুনর্গঠন, সার, সেচ, বীজ বিষয়ক কার্যক্রম এসবের ওপর সর্বাত্মক জোর দিয়েছেন। কেননা তিনি জানতেন এগুলো যথাযথভাবে না করতে পারলে আমরা অনেক পিছিয়ে যাব। বিশেষ করে রাসায়নিক সারের কথা তিনি বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের যে সার কারখানাগুলো আছে এগুলোকে নিশ্চিত উৎপাদনমুখি করতে হবে বেশি করে। প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন সারের কারখানা তৈরি-প্রতিষ্ঠা করতে হবে কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়নের জন্য। সুতরাং আমরাও একান্তভাবে বিশ্বাস করি আমাদের উন্নয়নের কর্মসূচি পরিকল্পনা গ্রহণ করার আগে সুষ্ঠু সমন্বিত বাস্তব অবস্থাভিত্তিক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। সর্বোচ্চ শ্রম, মেধা, শ্রম বিনিয়োগ করে এগিয়ে গেলে আমরা নিশ্চিত সফল হবই। গবাদি পশুর কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। গরু দিয়ে হাল চাষ, গরুর গোবর জমিতে প্রয়োগ করে জমির উর্বরতা বাড়ানোর তাকিদ তিনি তখনই দিয়েছেন। বালাই এবং বালাইনাশকের কথাও তিনি বলেছেন। নিজেদের বালাইনাশক কারখানা তৈরি এবং এর সুষ্ঠু ব্যবহারের প্রতি তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিজেরা বীজ উৎপাদন করতে হবে। প্রয়োজনে শুরুতে বিদেশ থেকে মানসম্মত বীজ আমদানি করে দেশের বীজের চাহিদা মিটাতে হবে। পরে আমরা নিজেরাই মানসম্মত উন্নত বীজ উদ্ভাবন করব। শীতকালীন ফসল উৎপাদনে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন শীতকাল আমাদের ফসল উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি নির্ভেজাল এবং নিশ্চিত মৌসুম। তাছাড়া অন্য দুই মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমে বেশি সংখ্যক বেশি পরিমাণ ফসল উৎপাদিত হয়। সেজন্য শীতকালে ফসল উৎপাদন বাড়িয়ে আমাদের শস্যভাণ্ডার টইটুম্বুর করতে হবে। কৃষিবিদদের তিনি শহরে অবস্থান না করে গ্রামেগঞ্জে চলে গিয়ে কৃষকের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করতে বলেছেন। কেননা বঙ্গবন্ধু জানতেন গ্রাম এবং কৃষকই কৃষি উন্নয়নই আমাদের সব উন্নয়নের মূলভিত্তি। গ্রাম এবং কৃষককে উন্নত করতে পারলে কৃষি তথা দেশ এমনিতেই উন্নত হয়ে যাবে। জমির খণ্ডায়ন বঙ্গবন্ধু পছন্দ করতেন না। তিনি চাইতেন সবাই মিলে এক সাথে সমবায়ের ভিত্তিতে জমিকে বিভক্ত না করে বড় জমিতে কৃষি কাজ কার। এতে খরচ কমে যাবে লাভ বেশি হবে।কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে কৃষির গুরুত্ব সীমাহীন। আমাদের রয়েছে উর্বর মাটি, প্রকৃতি প্রদত্ত অফুরন্ত সম্পদ, আর পরিশ্রমী জনগণ। এগুলোর সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা অসাধ্য সাধন করে ফেলতে পারি। গড়তে পারব বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, সুখে থাকবে বাংলার মানুষ, সুখে থাকবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন ছিল এদেশের শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো, তাই তিনি কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার প্রদানের পাশাপাশি কৃষি উন্নয়নের সৈনিক কৃষিবিদদের যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। এজন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর। দরকার আমাদের সমন্বিত, আন্তরিক এবং কার্যকর পদক্ষেপ। বঙ্গবন্ধু একটি নতুন মানচিত্র চেয়েছিলেন, নতুন ভূ-খণ্ড চেয়েছিলেন, নতুন জাতিসত্তা চেয়েছিলেন, চেয়েছিলেন একটি স্বনির্ভর সুখী মানুষের সোনার  দেশ।আমাদের সবার সম্মিলিত আন্তরিক এবং কার্যকরী প্রচেষ্টায় আমাদের নিয়ে যাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সর্বোচ্চ সীমায়। অদূর ভবিষ্যতে আমরা বিনির্মাণ করতে পারব স্বনির্ভর সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। একটি কথা, শুধু বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে বা শ্রদ্ধা করেই স্বনির্ভর সোনার বাংলা গড়া যাবে না। বঙ্গবন্ধুর কথাগুলোকে তিল তিল করে কাজে লাগাতে হবে, কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত করতে হবে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন। তবেই আমরা তার কথা রেখেছি সে কথা বলতে পারব গর্বের সাথে। কথার চেয়ে কাজ বেশি, পরিকল্পনার চেয়ে বাস্তবায়ন বেশিই হোক আমাদের আন্তরিক অঙ্গীকার। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হোক আমাদের হৃদয়ের মন মানসিকতার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে। আমরা যেন তখন মাথা উঁচু করে বলতে পারি সার্থক জনম মাগো জন্মেছি এ দেশে।লেখক : উপরিচালক (গণযোগাযোগ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়িএইচআর/আরএস

Advertisement