আন্তর্জাতিক

প্রতিবন্ধী দুই মেয়ের স্বেচ্ছামৃত্যু চান বাবা মা

সাত বছর ধরে দুই প্রতিবন্ধী মেয়ের জন্য সাহায্য চেয়ে এসেছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। কখনো হাত পেতেছেন স্থানীয় নেতাদের কাছে, কখনো আবার একের পর এক চিঠি লিখেছেন সরকারকে। সাহায্য মেলেনি। এদিকে, নিজেদেরও বয়স বাড়ছে। অনটনের সংসারে তাদের অবর্তমানে দুই মেয়েকে দেখবে কে? বাধ্য হয়ে তাই প্রতিবন্ধী দুই মেয়ের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়ে সরকারের দ্বারস্থ হলেন বাবা-মা। হতাশ দম্পতির একটাই আবেদন, সাহায্য করতে না পারলে সরকার অন্তত মেয়েদের স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতিটুকু দিক।এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের নদিয়ায়। পরিবারের উপার্জনক্ষম বাবা পেশায় দিনমজুর। স্ত্রী গৃহবধূ। ছেলে বিএসএফের সদস্য। দেশরক্ষার ব্রত পালনে নিয়োজিত। দুই মেয়েকে নিয়ে দু’টি ঘরে থাকেন দম্পতি। দুই মেয়ে কৃষ্ণা এবং রমা ঘোষ শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের শরীরের ৮৫ শতাংশ অসাড়। পাড়ার কয়েকজন শিশুকে পড়িয়ে সামান্য আয় করেন দুই বোন। কোনো রকমে টেনেটুনে চলে সংসার। হুইল-চেয়ারবন্দি রমা বলেন, ছোট থেকে খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি। ছোটবেলায় তবুও হাঁটতে পারতাম। কিন্তু তারপর থেকেই হুইল-চেয়ারবন্দি। মা-বাবাই দেখাশোনা করেন। কিন্তু এখন তো মা-বাবারও যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আমাদের আর টানতে পারছেন না।  মা-বাবার অবর্তমানে আমাদের কে দেখবে? যদি আমাদের ভবিষ্যতের কোনো আশ্বাস সরকার না দিতে পারে, তাহলে বেঁচে থেকে কী লাভ?একই সুর কৃষ্ণার গলাতেও। বলেন, সরকার যদি আমাদের কোনো সাহায্য দিতে না পারে, তাহলে আমাদের স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিক। আমরা মরতে রাজি। এক জওয়ানের পরিবারের প্রতি সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই? কোনো কর্তব্য নেই? কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা যমুনা ঘোষ বলেন, বাবা-মায়েরা সন্তানের দীর্ঘায়ু কামনা করেন প্রার্থনা করে। আমরা মেয়েদের মৃত্যু চাইছি। ভেবে দেখুন, কতটা অসহায় আমরা! কতখানি কষ্ট থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বারবার ঈশ্বরকে বলছি, আগে ওদের মৃত্যু দাও। কারণ, আমরা আর টানতে পারছি না। সরকারের তরফ থেকেও কোনো সাহায্য পাচ্ছি না। আমরা মরে গেলে ওদের কে দেখবে? তাই বলছি, যদি পাশে না দাঁড়াতে পারে, তাহলে অন্তত ওদের স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিক সরকার। এসআইএস/পিআর

Advertisement