বিনোদন

একসঙ্গে থাকবো বলেই বিয়ে করেছি : মাহি

স্বামী, শ্বশুরবাড়ি নিয়ে মেতে আছেন ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়িকা মাহিয়া মাহি। সংসারের মজাটা তিনি উপভোগ করছেন আর দশটা সাধারণ নারীর মতোই। মুগ্ধ হচ্ছেন সবার ভালোবাসায়, মুগ্ধ করছেনও। বিয়ের পর থেকেই থাকছেন শ্বশুরালয় সিলেটে। অভিনয়ে এখনো চলছে তার অবকাশ। ফিরবেন সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে। তবে গতকাল শনিবার, ১৩ আগস্ট বিমানে চড়ে এক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন মাহি। সঙ্গে ছিলেন স্বামী পারভেজ মাহমুদ অপুও। উদ্দেশ্য নবদম্পতি হিসেবে আরটিভিতে ঈদের জন্য নির্মিত অনুষ্ঠান ‘প্রাণ গুঁড়া মসলা স্টার কুক’ নামের একটি রান্নার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া। অনুষ্ঠানের শুটিং শেষে যাবার আগে মাহি মুখোমুখি হলেন জাগো নিউজের। সঙ্গে ছিলেন লিমন আহমেদ। ছবি তুলেছেন জাগো নিউজের আলোকচিত্রী মাহবুব আলম-

Advertisement

জাগো নিউজ : আপনার সময় জ্ঞান নিয়ে অনেক ইতিবাচক গল্প রয়েছে। আজও (শনিবার) অনুষ্ঠান শুরুর দশ মিনিট আগেই সেই সিলেট থেকে এসে হাজির হলেন। সবাই তো প্রশংসায় পঞ্চমুখ। শুভেচ্ছা আপনাকে...মাহি : আপনাকে এবং জাগো নিউজকেও ধন্যবাদ। আসলে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সময়ের প্রতি আমি সচেতন থাকার চেষ্টা করেছি। শুটিং হচ্ছে ব্যয়বহুল একটি বিষয়। এখানে পাঁচ মিনিট লেট মানে অনেককিছু গড়বড় হয়ে যাওয়া। তাই খুব বেশি জটিল কোনো সমস্যার মুখোমুখি না হলে আমি কখনোই শুটিং স্পটে যেতে দেরি করি না। এখান থেকেও যখন আমাকে বলা হলো আড়াইটার মধ্যে হাজির থাকতে আমি সেই চেষ্টাই করেছি। সিলেট থেকে বাই রোডে আসতে দেরি হবে বলে বিমানে করে এসেছি। মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার স্বামীও সময়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। জাগো নিউজ : তা আজ দুজন মিলে কী রান্না করলেন?মাহি : অনুষ্ঠানটি যেহেতু কোরবানি ঈদে প্রচার হবে তাই্ গরুর মাংস দিয়েই একটি রেসিপি তৈরি করেছি আমরা। এর নাম কাটাকাট। এটি মিডল ইস্টের খাবার। বেশ সহজ বানানো কিন্তু খুব মুখরোচক। জাগো নিউজ : শ্বশুরবাড়িতে আপনার রান্নার প্রশংসার খবর শুনেছি। তো আপনার স্বামীও রান্না করতে পারেন?মাহি : অপুও ভালোই রান্না করতে জানে। স্ত্রী হিসেবে ওর কাছ থেকে এটা আমার বাড়তি পাওনা। জাগো নিউজ : স্বামীকে নিয়ে প্রথমবার কোনো রান্নার অনুষ্ঠানে আসলেন। কেমন লাগছে?মাহি : খুব ভালো লাগছে। প্রথমত ওকে (স্বামী) নিয়ে কোথাও যেতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। খুব ভালো হতো অপু যদি অভিনয় জানতো। দুজন মিলে অভিনয় করতাম। হা হা হা... আর রান্নার অনুষ্ঠান বলে ভালো লাগাটা একটু বেশি। সবসময় তো অনুষ্ঠানে গেলে সিনেমা, অভিনয়- এইসব নিয়েই বেশি কথা হয়। এবার একটু ব্যতিক্রম অভিজ্ঞতা হলো। উপস্থাপিকা শারমীন লাকি আপু চমৎকার মানুষ। তার সঙ্গে অনেকটা আনন্দময় সময় কাটলো। আর কেকা ফেরদৌসী আপুর রান্নার ভক্ত আমি। এই অনুষ্ঠানে এসে তার মিষ্টি আদর পেলাম। খুব ভালো লাগছে। চমৎকার এই অভিজ্ঞতার জন্য প্রাণ গ্রুপ বিশেষ করে প্রাণ গুঁড়া মশলা ও আরটিভিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।জাগো নিউজ : এবার আপনার সংসার যাপনের গল্প বলুন। কেমন লাগছে সব?মাহি : খুবই ভালো। শুধুই মুগ্ধতা। আমার শ্বশুরবাড়ির মানুষগুলো খুব ভালোবাসতে জানেন। অল্পদিনেই তারা আমাকে মায়ায় বেঁধে ফেলেছেন। আমিও তাদের সবাইকে ভালোবাসি। দোয়া করবেন যাতে সারাটা জীবন এই মুগ্ধতা নিয়ে সংসার করতে পারি। জাগো নিউজ : তারকাদের প্রেম-বিয়ে নিয়ে সবার ধারণা নেতিবাচক। বলা হয়ে থাকে সম্পর্ক গড়তে এদের সময় লাগলেও ভাঙতে সময় লাগে না। সেক্ষেত্রে নিজের সংসারজীবন নিয়ে কী বলবেন? মাহি : দেখুন তারকারাও মানুষ। তারা জনপ্রিয় বলেই তাদের এইসব বিষয় নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। কিন্তু আমার মতে অন্যের জীবন নিয়ে নেতিবাচক ধারণা রাখা ঠিক না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ আদর্শ নিয়ে চলেন। প্রত্যেকেই সুখের জন্য, শান্তির জন্য সম্পর্ক করেন, সংসার পাতেন। ভবিষ্যতে যদি সেখানে মন্দ বাতাস ঢুকে যায় তার জন্য সমালোচনার কিছু নেই। আর আমি নিজের সংসার নিয়ে বলবো অপুর মতো স্বামী পেয়েছি আমি, এটা আমার ভাগ্য। একজন মানুষ মনের দিক থেকে কতোটা সুন্দর হতে পারে সেটা ওকে না দেখলে আমি বুঝতাম না। এমন স্বামীর সংসারের জন্য অনেক কিছুই করা যায়। সেও আমাকে ভালোবাসে, আমার সবকিছুকে মূল্যায়ণ করে। আজীবন একসঙ্গে থাকবো বলেই তো এই বাঁধনে জড়িয়েছি, বিয়ে করেছি। জাগো নিউজ : বধূ মাহির তো অনেক আদর, নায়িকা মাহির কদর কতটুকু আপনার স্বামীর বাড়িতে?মাহি : আমি সেখানেই বাড়ির বউ। এটাই আমার কাছে প্রাধান্য পায়। তবে আমার পেশাগত একটি পরিচয় আছে। সেটিকেও তারা সম্মান করেন। অনেকেই আছেন আমার অভিনয় পছন্দ করেন। আর আমার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যরা সবাই চায় আমি অভিনয়টা চালিয়ে যাই। তারা তাদের বাড়ির বউয়ের পেশাটাকে উৎসাহিত করছেন এটা আমার কাছে অনেক বড় প্রেরণার। জাগো নিউজ : তা অভিনয়ে ফিরছেন কবে?মাহি : সবকিছু ঠিক থাকলে কোরবানি ঈদের পরপরই। ঢাকা অ্যাটাক ছবির কাজ করতে হবে। আরো কিছু নতুন চলচ্চিত্র নিয়ে কথা হচ্ছে।জাগো নিউজ : জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে আবারো কাজ করতে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। সত্যি?মাহি : এ ব্যাপারে আমি তো কিছুই জানিনা। কে ছড়ায় এসব! আমি ভাই লুকোচুরি পছন্দ করি না। যা হবার সেটা সবাইকে জানিয়েই হবে। জাগো নিউজ : ঈদে আর কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যাবে আপনাদের?মাহি : বেশ কিছু টিভি থেকেই তো নানা রকম অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পাচ্ছি। সময় ও সুযোগ হলে হয়তো দেখা যেতেও পারে। জাগো নিউজ : পরপর দুটি ঈদ কাটলো আপনার ছবি নেই। খারাপ লাগে না ?মাহি : খারাপ তো লাগেই। মন্দার ফিল্ম মার্কেট। ঈদ এলেই প্রযোজকরা কিছু টাকা ঘরে তোলার সুযোগ পান। সারা বছর তারা যে লগ্নিটা করেন সেটা অনেকটা পুষিয়ে যায়। তাই ঈদে ছবি নিয়ে হাজির থাকতে পারলে ভালো লাগে। আর ভক্তরাও মন খরাপ করে গেল ঈদে ফেসবুকে অনেক কিছু বলেছেন। কিন্তু খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। এটাও তো জীবনেরই অংশ। আল্লাহর রহমতে সেপ্টেম্বর থেকে আবারো নিয়মিত হচ্ছি। হয়তো আগামী বছরগুলোতে প্রতি ঈদেই ছবি নিয়ে হাজির হতে পারবো।জাগো নিউজ : রোজার ঈদ তো শ্বশুরবাড়িতে কাটলো। এবারের ঈদ করবেন কোথায়?মাহি : মনে হয় শ্বশুরবাড়িতেই। তবে ঢাকায় আসবো। মা-বাবা পরিবারের সঙ্গেও ঈদ করবো। এলএ/এইচআর/এবিএস