দেশজুড়ে

হাতি দেখতে নিষেধাজ্ঞা জারি

প্রতিনিয়ত উত্তেজিত হয়ে উঠছে দলছুট বন্য হাতি ‘বঙ্গ বাহাদুর’। রোববার সকালে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা রশি ছিড়ে ফেলেছে হাতিটি। তবে হাতির পেছনের দুই পা এখনো লোহার শেকলে বাঁধা থাকায় বেশি দূর যেতে পারেনি। হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতোমধ্যে ৪টি চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়েছেন চিকিৎসকরা।এদিকে উৎসুক মানুষের ভিড়ের কারণে বঙ্গ বাহাদুর উত্তেজিত হয়ে পড়ছে বলে বনবিভাগের অনুরোধে উপজেলা প্রশাসন হাতি দেখার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। স্থানীয় লোকজন ব্যতীত ওই গ্রামের রাস্তায় সর্বসাধারণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামের প্রবেশ সড়কে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত নোটিশ টানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কয়ড়া গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামে এই বিষয়ে মাইকিং করা হয়েছে। উৎসুক মানুষের ভিড় ঠেকাতে এবং যাতাযাত নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয়দের নিয়ে একটি সেচ্ছাসেবক গ্রুপও গঠন করা হয়েছে। জানা গেছে, উদ্ধার হওয়ার পর থেকে একটি বড় আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিলো দলছুট বন্য হাতি ‘বঙ্গ বাহাদুরকে’। পেছনের দুপায়ে লম্বা শিকল ও সামনের দুই পায়ে মোটা দড়ি দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। শিকল ও দড়ি অনেকটা লম্বা রাখা হয়েছে যাতে হাতিটি নির্দিষ্ট এলাকায় চলাফেরা করতে পারে। কিন্তু পায়ে শিকল বাঁধা আর অসংখ্য মানুষের উপস্থিতিতে প্রতিনিয়ত উত্তেজিত হয়ে উঠছে সে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উত্তেজিত হয়ে তাকে বেঁধে রাখা রশি ছিড়ে নিজেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয় সে। নিজেকে মুক্ত করার পর অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পিছনের পায়ে লোহার শিকল থাকায় বেঁধে রাখার স্থান থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে অবস্থান নিয়েছে সে। এদিকে উত্তেজিত হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকরা ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে ৪টি চেতনানাশক ইনজেকশন (র্ডাড) প্রয়োগ করার পরও হাতিটি প্রায় এক ঘণ্টা যাবৎ একই স্থানে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমানে বনবিভাগের কর্মীরা হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপদ স্থানে বেঁধে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। শনিবার প্রধান বন সংরক্ষক অসিত রঞ্জন পাল বঙ্গ বাহাদুরকে দেখতে সরিষাবাড়ী এসেছেন। তিনি উদ্ধারকারী টিমের সঙ্গে বৈঠক করে হাতিটিকে কী ভাবে বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে নেয়া যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ করেন। প্রধান বন সংরক্ষক জানিয়েছেন, এখন হাতিটি যেখানে রয়েছে সেখান থেকে মূল সড়ক প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। এই এক কিলোমিটার কর্দমাক্ত থাকায় মূল সড়কে হাতিটিকে নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। অনুকূল পরিবেশ পেলেই যত দ্রুত সম্ভব হাতিটিকে সাফারি পার্কে নেয়ার চেষ্টা করা হবে। তবে উৎসুক মানুষের উপস্থিতি হাতিটিকে বেশি উত্তেজিত করে তুলবে বলে জানান তিনি।এ ব্যাপারে হাতি উদ্ধার অভিযান বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান সাবেক বন সংরক্ষক ড. তপন কুমার দে জানান, বঙ্গ বাহাদুর দিন দিন উত্তেজিত হয়ে উঠছে। আজ সকালে গাছের সঙ্গে বাঁধা রশি ছিড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে হাতিকে চারটি র্ডাড (চেতনানাশক ইনজেকশন) দেওয়া হয়েছে। হাতির পায়ে ডান্ডা-বেড়ি পরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। হাতিকে বশে আনতে আগামীকাল সাফারি পার্ক থেকে দুই প্রশিক্ষিত হাতি আনা হচ্ছে।   শুভ্র মেহেদী/এফএ/এমএস

Advertisement