জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের সব সময়ই একটা নিবিড় যোগাযোগ ছিলো। বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক জানলেও তার জীবনে সংবাদপত্রের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্কের কথা অনেকেরই অজানা। এটি অনেকটা আড়ালে রয়ে গেছে। সংবাদপত্রের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি নতুন প্রজন্মের সবার জানা উচিৎ। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সূচনালগ্ন থেকেই সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ওঠে। তিনি হয়তো তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সংবাদপত্রের গুরুত্বের কথা অনুভব করতে পেরেছিলেন। এ কারণেই সংবাদপত্রের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর এতো ঘনিষ্ঠতা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বরেণ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জীবনী পড়লে জানা যায়, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদেরকে তারা যথাযথ মূল্যায়ণ করতেন। সংবাদিকদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন। কেননা প্রতিটি দেশেরই জনগণ, রাষ্ট্র, রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে সংবাদপত্র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সেতু বন্ধন রচনা করে। এই যোগযোগের কল্যাণে একজন রাজনৈতিক নেতা তার দেশ, মাটি, মাতৃভূমিকে নিয়ে কি ভাবছেন, তা সুস্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়। সঙ্গত কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের গুরুত্বের কথা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সহজে বুঝতে পারতেন বলেই তিনি বিশে^র রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন দূরদর্শী নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ করলে তার রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে সংবাদপত্রের ওতপ্রোত ঘনিষ্ঠতার কথা জানা যাবে। এমন কী বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশপাশি কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন, ‘দৈনিক আজাদই ছিলো একমাত্র বাংলা খবরের কাগজ, যা মুসলীম লীগ ও পাকিস্তান আন্দোলনের সমর্থন করতো। এই কাগজের প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক মওলানা আকরম খাঁ সাহেব ছিলেন বাংলা ও প্রাদেশিক মুসলীম লীগের সভাপতি। তিনি আবুল হাশিম সাহেবকে দেখতে পারতেন না। আবুল হাশিম সাহেবকে শহীদ সাহেব সমর্থন করতেন বলে মওলানা সাহেব তার উপর ক্ষেপে গিয়েছিলেন। আমাদেরও ঐ একই দশা। তাই আমাদের কোন সংবাদ সহজে ছাপা হত না। মাঝে মাঝে জনাব মোহম্মদ মোদাব্বের সাহেবের মারফতে কিছু সংবাদ উঠত। পরে সিরাজুদ্দিন হোসেন (বর্তমানে নৈদিক ইত্তেফাকের বার্তা সম্পাদক) এবং আরও দুএকজন বন্ধু আজাদ অফিসে চাকরি করতেন। তারা ফাঁকে ফাঁকে দুই একটা সংবাদ ছাপাত। দৈনিক মনিং নিউজের কথা বাদই দিলাম। ঐ পত্রিকা যদিও পাকিস্তান আন্দোলনের পরোপুরি সমর্থন করতো তবুও ওটা গোষ্ঠীর সম্পত্তি ছিলো, যাদের শোষক শ্রেণী বলা য়ায়। আমাদের সংবাদ দিতেই চাইত না। ঐ পত্রিকা হাশিম সাহেবকে সমর্থন করত, তাই বাধ্য হয়ে মাঝে মাঝে সংবাদ দিত। আমরা বুঝতে পারলাম, অন্ততপক্ষে একটা সাপ্তাহিক খবরের কাগজ হলেও আমাদের বের করতে হবে। বিশেষ করে কর্মীদের মধ্যে নতুন ভাবধারা প্রচার করার জন্য। হাশিম সাহেবের কাগজ বের করা কষ্টকর। কারণ টাকা পয়সার অভাব। শহীদ সাহেব হাইকোর্টে ওকালাতি করতে শুরু করেছেন। তিনি যথেষ্ট উপার্জন করতেন, ভালো ব্যারিস্টার হিসেবে কলকাতায় নাম ছিলো। কলকাতায় গরীবরাও যেমন শহীদ সাহেবকে ভালোবাসতেন, মুসলমান ধনীক শ্রেণীকেও শহীদ সাহেব যা বলতেন, শুনত। টাকা পয়সার দরকার হলে কোনদিন অসুবিধা হতে দেখি নাই। হাশিম সাহেব শহীদ সাহেবের কাছে প্রস্তাব করলেন কাগজটা প্রকাশ করতে এবং বললেন যে, একবার যে খরচ লাগে তা পেলে পরে জোগাড় করতে অসুবিধা হবে না। নুরুদ্দিন ও আমি এই দুইজনই শহীদ সাহেবেকে রাজি করাতে পারব, এই ধারণা অনেকেরই ছিল। আমরা দুজনই একদিন সময় ঠিক করে তার সঙ্গে দেখা করতে যাই এবং বুঝিয়ে বলি বেশি টাকা লাগবে না, কারণ সাপ্তাহিক কাগজ। আমাদের মধ্যে অনেক ভাল ভাল লেখার হাত আছে, যারা সামান্য হাত খরচ পলেই কাজ করবে। অনেককে কিছু না দিলেও চলবে। আরও দুএকবার দেখা করার পরে শহীদ সাহেব রাজি হলেন।মুসলিম লীগ অফিসের নিচের তলায় খালি ঘর ছিলো। তাই জায়গার অসুবিধা হবে না। হাশিম সাহেব নিজেই সম্পাদক হবেন এবং কাগজ বের করা হলো।’জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার এ আত্মজীবনীতে আরও উঠে এসেছে যে, তিনি এক সময় পত্রিকা বিক্রির কাজেও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। এ প্রসঙ্গে তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে পাওয়া যায়, ‘আমরা অনেক কর্মীই রাস্তায় হকারী করে কাগজ বিক্রি করতে শুরু করলাম। কাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস সাহেবই কাগজের লেখা ছাপার ভার নিলেন। সাংবাদিক হিসেবেও তার যথেষ্ট নাম ছিলো। ব্যবহারও ছিলো অমায়িক। সমস্ত বাংলাদেশেই আমাদের প্রতিনিধি ছিল। তারা কাগজ চালাতে শুরু করল। বুদ্ধিজীবী সমাজে কাগজটা খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করতে লাগল। হিন্দুদের মধ্যে অনেকে কাগজটা পড়তেন। এর নাম ছিলো মিল্লাত।’এমনকি বঙ্গবন্ধু আলোচনা ও বক্তৃতাতে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার উদ্ধৃতি দিতেন। এ বিষয়ে তার প্রখর স্মৃতি শক্তি ছিলো। তার আত্মজীবনীর এক অংশে সে সময়ের আজাদ পত্রিকার খবরের কথা এভাবে লিখেছেন, ‘খাজা নাজিমুদ্দীন সাহেব ১৯৪৭ সালের ২২ এপ্রিল ঘোষণা করেছিলেন, যুক্ত বাংলা হলে হিন্দু মুসলমানদের মঙ্গলই হবে। মওলানা আকরম খাঁ সাহবে মুসলিম লীগের সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন, আমার রক্তের উপর দিয়ে বাংলাদেশ ভাগ করা হবে। আমার জীবন থাকতে বাংলাদেশ ভাগ করেতে দেবো না। সমস্ত বাংলাদেশই পাকিস্তান হয়ে যাবে।এই ভাষা না হলেও কথাগুলির অর্থ এই ছিলো। আজাদ কাগজ আজও আছে। ১৯৪৭ সালের কাগজ বের করেই দেখা যাবে।বঙ্গবন্ধু যে পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেছেন, তার স্পষ্ট ভাষ্য পাওয়া যায়। তিনি অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লেখেন, ‘মানিক ভাই তখন কলকাতায় ইত্তেহাদ কাগজের সেক্রেটারি ছিলেন। আমাদের টাকা পয়সার খুবই প্রয়োজন, কে দিবে? বাড়ি থেকে লেখা পড়ার খরচা কোনমতে আনতে পারি কিন্তু রাজনীতি করার টাকা কোথায় পাওয়া যাবে? আমার একটু স্বচ্ছল অবস্থা ছিল, কারণ আমি ইত্তেহাদ কাগজের পূর্বপাকিস্তানের প্রতিনিধি ছিলাম। মাসে প্রায় তিনশ টাকা পেতাম। আমার কাজ ছিলো এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় করা, আর ইত্তেহাদ কাগজ যাতে চলে এবং নতুন এজেন্ট বিভিন্ন জায়গায় নিয়োগ করা যায় সেটা দেখা’বঙ্গবন্ধু শুধু নিজের দেশের সাংবাদিকদেরই সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন না। দেশের বাইরের সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করতেন। তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি তার আত্মজীবনীতে লেখেন, ‘লাহোরে যে হোটেলে আমি থাকতাম তার দুটা রুম ভাড়া নিয়ে মিস্টার আজিজ বেগ ও মিস্টার খুরশিদ (যিনি আজাদ কাশ্মীরের প্রেসিডেন্ট ছিলেন) সাপ্তাহিক গার্ডিয়ান কাগজ বের করতেন। এরা পাকিস্তান টাইমসে আমার বিবৃতি দেখেছিলেন এবং বিবৃতির কিছু অংশ গার্ডিয়ান কাগজে বের করেছিলেন। আমি তাদের সঙ্গে দেখা করলাম এবং সকল বিষয়ে আলোচনা করলাম। গার্ডিয়ান প্রতিনিধি আমার সাথে দেখা করে একটা সাক্ষাতের রিপোর্ট প্রকাশ করবেন। আস্তে আস্তে লাহোরের রাজনীতি কি রকম তা জানতে পারলেন, আমি লাহোরে আছি’। তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের পাকিস্তান টাইমসের অফিসে যাওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু এক বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে ছিলেন। সে সম্পর্কে তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘এ সময় একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটে গেল। আমি এক দিন মিয়া সাহেবের সাথে দেখা করতে পাকিস্তান টাইমস অফিসে যাই। তখন প্রায় সকাল এগারোটা। মিয়া সাহেব সেখানে নাই। আমি কিছু সময় দেরি করলাম। মিয়া সাহেব আসলেন না। আমার কাজ ছিলো শহীদ সাহেবের সাথে। হাইকোর্টে যাব তার সাথে দেখা করতে। যখন আমি বের হয়ে কিছু দূর এসেছি, তিন চারজন লোক আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো, আমার বাড়ি কোথায়? আমি বললাম পূর্বপাকিস্তানে।হঠাৎ একজন আমার হাত, আর একজন একটা হান্টার অন্যজন একটা ছোরা বের করল। আমি বললাম, কথা শোনেন, কি হয়েছে বলেন, আর যদি লড়তে হয় একজন করে আসুন।একজন আমাকে ঘুষি মারল, আমি হাত দিয়ে ঘুষিটা ফিরালাম। অনেক লোক জমা হয়ে আছে। কয়েকজন ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, কি হয়েছে? আমি বললাম কিছুইতো জানি না। এদের কাউকেও চিনি না। আমি পূর্ব বাংলা থেকে এসেছি। পাকিস্তান টাইমস অফিসে এসেছিলাম। মিয়া সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে’।বঙ্গবন্ধুর জীবদ্ধশায় তিনি শুধু এদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগই রেখে চলেননি, তিনি তাদের সুখ দুঃখের কথাও ভাবতেন। তিনি তখনকার দিনের দেশ-মাতৃকার জন্য নিবেদিত সাংবাদিক মানিক মিয়ার (বর্তমান দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক ছিলেন) পরিবারের কথা চিন্তা করেন। সেই সময়ের উত্তাল রাজনীতির দিনে সাংবাদিক মানিক মিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অন্তরঙ্গ সম্পর্কের কথা জানা যায়। এ বিষয়ে তিনি তার আত্মজীবনীতে লেখেন, ‘এক দিন ভাসানী সাহেব ও আমি যেয়ে দেখি মানিক ভাই দাঁড়িয়ে আছেন, আমাদের সাথে দেখা কারা জন্য। আলাপ আলোচনা হওয়ার পরে মানিক ভাই বললেন, নানা অসুবিধায় আছি। আমাদের দিকে খেয়াল করার কেউই নাই। আমি কি আর করতে পারব, একটা বড় চাকরি পেয়েছি। করাচিতে চলে যেতে চাই, আপনারা কি বলেন। আমি বললাম, মানিক ভাই আপনিও আমাদের জেলে রেখে চলে যাবেন? আমাদের দেখার কেউ বোধ হয় আর থাকবে না।আমি জানতাম মানিক ভাই চারটা ছেলে মেয়ে নিয়ে খুবই অসুবিধায় আছেন। ছেলে-মেয়েদের পিরোজপুরে রেখে তিনি একাই ঢাকায় আছেন। মানিক ভাই কিছু সময় চুপ করে থেকে আবার বললেন, না যাব না, আপনাদের জেলে রেখে’।একটা সংবাদপত্র কিভাবে চালাতে হয়, সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধু চিন্তা-ভাবনা করেছেন। ইত্তেফাক প্রকাশের প্রথম দিকের সময়ের কথা বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে জানা যায়, মওলানা সাহেব সাপ্তাহিক ইত্তেফাক কাগজ বের করেছিলেন। কয়েক সপ্তাহ বের হওয়ার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। কারণ টাকা কোথায়? মানিক ভাই বললেন, কাগজটা তো বন্ধ হয়ে গেছে, যদি পারো তুমিই চালাও। মানিক ভাই বলেন, কি করে চলবে, টাকা কোথায়? তবুও চেষ্টা করে দেখব। আমি মানিক ভাইকে আমার এক বন্ধুর কর্মচারীর কথা বললাম, ভদ্রলোক আমাকে আপন ভাইয়ের মত ভালোবাসতেন। কলকাতায় চাকরি করতেন, সোহরাওয়ার্দী সাহেবের ভক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের বাসিন্দা নন তবুও বাংলাদেশকে ও তার জনগণকে তিনি ভালোবাসতেন। আমার কথা বললে কিছু সাহায্যও করতে পারেন। মানিক ভাই পরের মামলার তারিখে বললেন যে, কাগজ তিনি চালাবেন। কাগজ বের করলেন। অনেক জায়গা থেকে টাকা যোগাড় করতে হয়েছিল।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জেলে থাকতেও নিয়মিত পত্রিকা পড়তে চাইতেন। অনেক প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে তিনি ইত্তেফাক পড়তেন। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর বয়ান থেকে জানা যাক, এ কাগজ আমাদের জেলে দেওয়া হত না, আমি কোর্টে এসে কাগজ নিতাম এবং পড়তাম। সমস্ত জেলায় কাগজটা চালাতে শুরু করল। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠানের কাগজ হিসেবে জনগণ একে ধরে নিল।শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু একজন সাংবাদিককে বিদেশ ভ্রমণের ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করেছেন। সাংবাদিক মানিক মিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রমণের সফর সঙ্গী করতে চাইলেন। কিন্তু নানা কারণে মানিক মিয়া চীনে যেতে চাচ্ছিলেন না। তবে বঙ্গবন্ধু মানিক মিয়াকে তার সঙ্গে সফর সঙ্গী করতে এক প্রকার বাধ্য করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লেখেন, ‘সকালে প্রস্তুত হয়ে আমি মানিক ভাইয়ের বাড়িতে চললাম। তখন রিকশাই একমাত্র সম্বল। সকাল আটটায় যেয়ে দেখি তিনি বাসায় আরামে শুয়ে আছেন। অনেক ডাকাডাকি করে তুললাম। আমাকে বললেন, কি করে যাব, যাওয়া হবে না, আপনারাই বেড়িয়ে আসেন। আমি রাগ করে উঠলাম। ভাবীকে বললাম, আপনি যেতে বলেন না, দশ পনের দিনে কি অসুবিধা হবে? মানিক ভাই লেখক। তিনি গেলে চীনের কথা লিখতে পারবেন, দেশের লোক জানতে পারবে। কাপড় কোথায়? সুটকেস ঠিক করেন। আপনি প্রস্তুত হয়ে নেন। আপনি না গেলে আমাদের যাওয়া হবে না।মানিক ভাই জানে যে, আমি নাছোর বান্দা। তাই তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হয়ে নিলেন’।এভাবেই বঙ্গবন্ধু তার গোটা রাজনৈতিক জীবন সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত রেখে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মতো করেই তার সুযোগ্য উত্তরসূরী বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সংবাদপত্রের জগতের মানুষদের প্রতি উদার মানোভাব দেখিয়ে যাচ্ছেন। সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।লেখক : সাহিত্যিক ও সাংবাদিকএইচআর/এমএস
Advertisement