ধর্ম

কল্যাণের দিকে অগ্রসর হতে আল্লাহর আহ্বান

আল্লাহ তাআলা সত্যগ্রন্থ কুরআনসহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মানুষের মুক্তির দিশারি করে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। উদ্দেশ্য একটাই এ জমিনে তাঁর দ্বীন প্রচার করবে। কালিমার দাওয়াত দিবে। সকল অন্যায়-অত্যাচার থেকে পথহারা জাতিকে সঠিক পথে সন্ধান দিবে। কিন্তু পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবের অনুসারীরা বিশ্বনবির পরিচয় সুস্পষ্টভাবে পাওয়ার পরও তাকে অস্বীকার করে। যার ফলে আল্লাহ তাআলা তাঁদের উদ্দেশ্যে বিশ্বনবিকে চেনার উপমা তুলে ধরে বলেন-‘প্রত্যেকের জন্যই এক একটি লক্ষ্যস্থল (দিক) বা ক্বিবলা রয়েছে সে দিকেই সে (নামাজের জন্য) তার মুখ ফেরায়; অতএব তোমরা সৎ (কল্যাণের) কাজে (আনুগত্য প্রদর্শন ও তা গ্রহণ করার বিষয়ে) দ্রুত গতিতে ধাবিত হও; তোমরা যেখানেই থাক না কেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের সবাইকেই (কিয়ামাতের দিন) একত্রিত করবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৪৮)এ আয়াতের ব্যাখ্যায় দুটি অভিমত পাওয়া যায়-১. ক্বিবলা নিয়ে তর্ক-কলহ অবান্তর। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক উম্মতের জন্যই ক্বিবলা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তারা তার প্রতি মুখ করেই ইবাদাত-বন্দেগি করে। অর্থাৎ হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের শরিয়তে ক্বিবলা ছিল কাবা তথা বাইতুল্লাহ। আর হজরত মুসা আলাইহিস সালামের শরিয়তে ক্বিবলা ছিল বাইতুল মুকাদ্দাস।অনুরূপভাবে আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহর জন্যও আল্লাহ তাআলা একটি স্বতন্ত্র ক্বিবলা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যেমনি ভাবে তোমাদের দ্বীন স্বতন্ত্র, তেমনি তোমাদের ক্বিবলাও স্বতন্ত্র হওয়া উচিত। আর এক্ষেত্রে কোনো দিককে নিজের মন মতো ক্বিবলা সাব্যস্ত করা ঠিক নয়। আল্লাহ তাআলা যেটিকে ক্বিবলা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তাই ক্বিবলা হয়েছে। তাই এনিয়ে বিতর্ক না করে আসল উদ্দেশ্য ইবাদাতে মগ্ন হওয়া। কেননা ইবাদাত হলো মূল। আর ক্বিবলা হলো ইবাদাতের একটি মাধ্যম মাত্র।২. মুসলমানদের সকল সম্প্রদায় কা’বার বিভিন্ন দিকে তথা কেউ পূর্বে, কেউ পশ্চিমে, কেউ উত্তরে, কেউ দক্ষিণে অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় কারো ক্বিবলা পূর্ব দিক হতে, আবার কারো ক্বিবলা পশ্চিম দিক হতে, কারো ক্বিবলা দক্ষিণ দিক হতে এবং কারো ক্বিবলা উত্তর দিক হতে।তাই কাবা (ক্বিবলা) নিয়ে বাড়াবাড়ি, কলহ-বিবাদের কোনো অর্থ হয় না। যে পূণ্য সাধনা ও সঞ্চয় মূল উদ্দেশ্য, তাতে দ্রুতগামী হতে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন। কল্যাণের নির্দেশ ক্বিবলা নিয়ে বাড়াবাড়ি নয় বরং ইবাদাত-বন্দেগিতে গভীরভাবে আত্মনিয়োগে ধাবমান হওয়ারও তাগিদ দিয়েছেন।উপরন্তু যারা পরকালে পুনরুত্থানের বিষয়ে সন্দিহান, তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলা বলেন, তিনি প্রতিদান দিবসে সকলকে একত্রিত করতে সক্ষম। কেননা তিনি সৃষ্টির সব বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ আয়াতের আহ্বান ক্বিবলা সংক্রান্ত বাড়াবাড়ি না করে আল্লাহর নির্ধারিত ক্বিবলার দিকে মুখ করে ইবাদাত বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার সকলকে আখিরাতে একত্রিত করার প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস

Advertisement