আইন-আদালত

শিশু হত্যা ও ধর্ষণের বিচারে আইন সংশোধন দরকার

শিশুর প্রতি নির্যাতন (হত্যা, ধর্ষণ) গুরুতর হলে ভিকটিমের বিচার কোন আইনে বা কোন আদালতে হবে সে বিষয়ে শিশু আইনের অস্পষ্টতা দূরীকরণের প্রশ্নে হাইকোর্টের জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে আজ (মঙ্গলবার)। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৪ আগস্ট (রোববার) দিন ঠিক করেছেন আদালত। মঙ্গলবার শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করে আদেশ দেন। এদিকে আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। তিনি আদালতে বলেছেন, শিশু আইনে বলা হয়েছে এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের শিকার বা ভিকটিম এবং সাক্ষী শিশু হলে ওই মামলার বিচার শিশু আদালতে হবে। কিন্তু শিশুকে ধর্ষণ বা হত্যার মত গুরুতর অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রাপ্তবয়ষ্ক আসামির বিচার কোন আইনে বা আদালতে হবে সেটি শিশু আইনে স্পষ্টকরণ করা হয়নি। আইনে এই অস্পষ্টতা দূর করতে শিশু আইন সংশোধন করা দরকার। সাংবিধানিক আদালত হিসেবে হাইকোর্ট আইনটি সংশোধনের জন্য আইন, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিতে পারেন। সম্প্রতি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও রংপুরে শিশুকে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক চারটি মামলার কয়েকজন আসামি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করে। মামলার সকল আসামি প্রাপ্তবয়ষ্ক। শিশু আদালত এই প্রাপ্তবয়ষ্ক আসামিদের জামিনের আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করায় হাইকোর্ট রুল জারি করেন। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকদেরকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক চারটি আদালতের বিচারকরা নিজ নিজ লিখিত ব্যাখ্যা হাইকোর্টে দাখিল করেন। মঙ্গলবার হাইকোর্টে চারটি ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের ব্যাখ্যা পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনা শেষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, শিশু ধর্ষণ বা হত্যার জন্য প্রাপ্তবয়ষ্ক আসামির বিচার শিশু আইনে নয় নারী নির্যাতন আইনেই করতে হবে। কারন এই আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনের বিধান রয়েছে। উলে­খ্য, শিশু আইনে সর্বশেষ ২০১৩ সালে সংশোধনী আনা হয়। এই আইনের অধীনে প্রতিটি জেলায় গঠন করা হয় শিশু আদালত।  শিশু আইনের ১৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু বা আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু কোন মামলায় জড়িত থাকলে যে কোনো আইনের অধীনেই হোক না কেন, উক্ত মামলা বিচারের এখতিয়ার কেবল শিশু আদালতের থাকিবে।’এফএইচ/এসএইচএস/এবিএস

Advertisement