ঈদ-উল-ফিতর মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত এবং স্বজন হারানোর বেদনায় উৎসবের আমেজ নেই গাজার বাসিন্দাদের। এর মধ্যেই গাজার শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরা পালন করছে ঈদ।এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে ও শর্তহীন অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশনে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা রবিবার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয়।ইসলামী সংগঠন হামাসের ২৪ ঘন্টার অস্ত্রবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও রবিবার হামলা অব্যাহত রাখে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাস রবিবার অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল।মিসরের উদ্যোগে গাজায় অস্ত্রবিরতির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তার ভিত্তিতেই স্থায়ী অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। মিসরের অস্ত্রবিরতির উদ্যোগের আওতায় গাজার সীমান্ত খোলা ও ভবিষ্যতে টেকসই যু্দ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।নিজেদের জনগণের স্বার্থে ইসরায়েল যেকোনো পদক্ষেপ নেবে বলে ঘোষণা দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাস নিজেদের দেওয়া অস্ত্রবিরতি ভেঙ্গে ইসরায়েলের ভূখন্ড লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল।এদিকে গাজায় অবিলম্বে ও শর্তহীন মানবিক অস্ত্রবিরতি দিতে নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। রবিবার টেলিফোনে নেতানিয়াহুকে এই আহ্বান জানান ওবামা। গাজার বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজতেও নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানান ওবামা।মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির ইসরায়েল সফর সফল না হওয়ার কারণে ওবামা নেতানিয়াহুকে ফোন করে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
Advertisement
শনিবার ১২ ঘন্টার যে অস্ত্রবিরতি দেওয়া হয়েছিল তাতে গাজার বাসিন্দাদের অনেকেই তাদের প্রয়োজনীয় রসদ সংগ্রহ ও ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া স্বজনদের উদ্ধার করতে পারেননি। পরে জাতিসংঘের আহ্বানে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েলি স্থল বাহিনী হামাসের ব্যবহার করা সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস চালিয়ে যাবে বলে জানায় ইসরায়েল।পবিত্র রমজান মাসের শেষ ও ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখেই জাতিসংঘের মধ্যস্থতার প্রতিক্রিয়ায় ও নিজেদের জনগণের জীবনযাত্রার পরিস্থিতি চিন্তা করে অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে হামাস।
২০ দিন ধরে চলা সহিংসতায় গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। অপরদিকে এই সহিংসতায় ৪৩ ইসরায়েলি সেনা ও দুই জন বেসামরিক নাগরিকের নিহত হয়েছেন।
Advertisement