বিশেষ প্রতিবেদন

চীনা সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগে জটিলতা

চলতি (২০১৬-১৭) অর্থবছর চীনের কাছ থেকে ৪৪১ কোটি ডলারের ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। এর বিপরীতে হাতে নেয়া হচ্ছে বেশ কিছু বড় প্রকল্পও। কিন্তু চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোপূর্বে চীন নিজেই তাদের অর্থ সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে ঠিকাদার নির্বাচন করতো। তবে এখন সরাসরি ঠিকাদার নিয়োগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা বড় অঙ্কের ঋণ প্রাপ্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইআরডির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, ঠিকাদার নিয়োগে মতবিরোধের কারণে প্রকল্পের ঋণ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সীমিত দরপত্র পদ্ধতির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ হবে। যেখানে শুধু চীনের ঠিকাদাররা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে এ পদ্ধতির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ অবস্থা কাটাতে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে বৈঠক প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।জানা গেছে, চীনের অর্থায়নে নেয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ১৩৯ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত দ্বৈত রেললাইন স্থাপনে ৭৫ কোটি ২৭ লাখ ডলার এবং জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মিটার গেজ রেললাইনের সমান্তরালে আরেকটি ব্রড গেজ লাইন নির্মাণে ২৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার ঋণ দিতে রাজি ছিল চীন। মূলত এসব প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এসব ঋণের আলোচনা আর এগোচ্ছে না।অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। সরাসরি ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া যাবে না। কিন্তু এ পদ্ধতি চূড়ান্ত না হওয়ায় চীনের এক্সিম ব্যাংক নতুন ঋণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাচ্ছে না।গত কয়েক বছরে চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়িত সবগুলো প্রকল্পেই দেশটি ঠিকাদার নির্ধারণ করে দিয়েছে। সম্প্রতি পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজও দেওয়া হয়েছে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে। এছাড়া পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ফার্স্ট নর্থ ইস্ট ইলেকট্রিক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে (এনইপিসি) কাজ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কর্ণফুলী টানেল, শাহজালাল সার কারখানা, ফোর টায়ার প্রকল্পসহ সব প্রকল্পেই চীন সরকার ঠিকাদার নির্ধারণ করে দিয়েছে। এসব প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগে উন্মুক্ত দরপত্র হয়নি। কাজ দেওয়া হয়েছে একক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়ম হলো, কোনো একটি প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রয় নীতিমালার (পিপিআর) আলোকে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দরপত্র ডাকতে হবে।এমএ/এমএমজেড/এমএস

Advertisement