গত জুলাইয়ের প্রথম দিনই ঘটে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম ন্যক্কারজনক ঘটনা। ঢাকার গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জন নির্মমভাবে প্রাণ হারান। তাতেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ পেয়ে গেলেন কেউ কেউ। তবে সে পথে না হেঁটে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বাংলাদেশ দলের ইংলিশ ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসল। জানালেন বর্তমান বিশ্বে এখন এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরোক্ষভাবে তিনি জানিয়ে দেন ‘এখন আর কোন দেশই নিরাপদ নয়। এটা মেনেই জীবন ধারণ করতে হবে আমাদের।’গুলশান ঘটনার পর অবশেষে গত শুক্রবার বিদেশি কোচদের মধ্যে বাংলাদেশে প্রথম আসেন রিচার্ড হ্যালসল। রোববার বিসিবি কার্যালয়ে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বলেন, ‘এটা কোন সাধারণ ঘটনা নয়। এটা খুবই নির্মম; কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটছে সারা পৃথিবীতেই। বেলজিয়ামে, ফ্রান্স এবং জার্মানিতেও। আমরা পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন, এমন ঘটনা ঘটতে থাকবেই। এটা জনগণের জন্য খুবই দুঃখজনক। তাই আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি তাদের জন্য, যারা সেখানে খুন হয়েছে।’গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনার সময়ে লন্ডনে ছিলেন হ্যালসল। তবে বাংলাদেশে না থাকলেও ঘটনার তীব্রতা সম্পর্কে জানেন। এর আগে ২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলা হয়। ওই সময় ভারতেই ছিলেন এ ইংলিশ। সে ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগেই আক্রান্ত তাজ হোটেল ছেড়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশও যখন সন্ত্রাসী আক্রমনে আক্রান্ত, তখন বিসিবির ওপর আস্থা রয়েছে তার। এ কারণে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে মেনেই বাংলাদেশে এসেছেন তিনি।‘অবশ্যই এ পরিস্থিতি আমাকে চিন্তায় ফেলেছে। আমি সবসময়ই ফিরে আসতে চেয়েছি। আমি একজন পেশাদার এবং আমার কাজ কোচিং করানো। বিসিবি আমার জন্য খুবই আন্তরিক। বিচক্ষণ কাজ ছিল ঘটনার পর পরিস্থিতিকে শান্ত হতে দেওয়া। আমাদের এখন খুব বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নেই। বিসিবি তাই করছে, যা তাদের করা উচিৎ।’তবে একজন পেশাদার কোচ হিসেবে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হ্যালসল। তার আশা খুব শীঘ্রই এ পরিস্থিতি থেমে যাবে। তবে আবার হতেও পারে ভেবে কিছুটা সাবধানী তিনি। এমন ঘটনা পৃথিবীর যে কোন দেশেই, যে কোন জায়গায় ঘটতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সঠিক মানুষদের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। কারণ জঙ্গি নামক অমানুষগুলো দেখতে অবিকল মানুষের মতই।‘আমার ধারণা এই ধরণের ঘটনা থেমে যাবে; কিন্তু তারমানে এই নয় যে এসব আর হবে না। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়। এটা ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানির জন্যও। আমাদের এখন বিচক্ষণ হতে হবে, সঠিক লোকদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। সত্যি কথা বলতে কি এই হুমকি এবং কর্মকাণ্ডে আগের চেয়ে বেশি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পেয়েছি।’আরটি/আইএইচএস/পিআর
Advertisement