নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি নিয়ে যখন প্রশ্ন আসে তখন এক বাক্যেই বলে দেয়া যায় যে, নারী নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। কেননা প্রায় দুই যুগ ধরে বাংলাদেশের ক্ষমতায় রয়েছেন দুই নারী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা। এই দুই নারী নেত্রী খুব শক্ত হাতেই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন। অপরদিকে, এখন পর্যন্ত কোনো নারীই যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসেননি।বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বের সূচনা হয়েছে ১৯৯১ সাল থেকে। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দেশের ক্ষমতায় ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ২০০১ সালে আবারো নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়বারের মত দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন। অপরদিকে, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। এরপর আবার ২০০৯ সালে নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয়বারের মত ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি। এরপর ২০১৪ সালে আবারো জয়ী হয়ে এখন পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দুই নেত্রী নির্বাচিত হয়ে শুধুমাত্র দেশ পরিচালনা করেছেন তা নয়। বরং দেশ পরিচালনার পাশাপাশি নিজের দল এবং বিরোধী দলের ওপর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষা করে ক্ষমতার বেশ রদবদল ঘটিয়েছেন। এটা যে কোনো জাতির জন্য বিশেষ করে মুসলিম প্রধান দেশের জন্য নজিরবিহীন ঘটনা। তারা দেশে সংখ্যালঘুদের নিজেদের মত চলা-ফেরা করার স্বাধীনতাও দিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ তৈরি করেছেন এই দুই নেত্রী। মুসলিম প্রধান এই দেশের ১০ ভাগ হিন্দু এবং ১ ভাগ খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ। সংখ্যালঘুরা দেশের রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রেই মুসলমানদের মত সমানাধিকার পাচ্ছেন। উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিন্দু। এদেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে নারী নেতৃত্বের কথা বলতে গেলে দেখা যাবে এমন ক্ষমতাধর দেশটিতে এখন পর্যন্ত কোনো নারীই দেশ শাসন করেননি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট দল থেকে প্রথম নারী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। নভেম্বরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট হলে হিলারির হাত ধরেই হয়তো নতুন ইতিহাস গড়বে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বাংলাদেশের দুই নারী নেত্রী দীর্ঘদিন ধরে দেশ শাসন করে এটাই প্রমাণ করেছেন যে, মুসলিম প্রধান দেশেও পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে নেই নারীরা। বরং তারা চাইলেই দেশের শীর্ষস্থানে থেকে একজন পুরুষের মতই দেশের জন্য কাজ করতে পারেন। টিটিএন/এমএস
Advertisement