আজ বাইশে শ্রাবণ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনন্য সাধকপুরুষ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৫তম প্রয়াণ দিবস। বৃষ্টি নিয়ে অজস্র কাব্য-গীতি রচনা করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি মানবের সব অনুভূতিকে বারবার খুঁজে ফিরেছেন বর্ষার ফোঁটার মাঝে। সেই বর্ষাকেই সঙ্গী করে তিনি পাড়ি জমান দৃষ্টি সীমানার ওপারে।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৫তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ ২২ শ্রাবণ শনিবার বিকাল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আহমদ রফিক রচিত ‘রবীন্দ্রজীবন (তৃতীয় খণ্ড)’-এর প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।২৩ শ্রাবণ রোববার বিকাল ৪টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একক বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রবীন্দ্র পুরস্কার-২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।রবীন্দ্রনাথের পরলোকগমনের মধ্য দিয়ে বাংলাভাষা ও সাহিত্যের সবচেয়ে প্রদীপ্ত নক্ষত্রটি খসে পড়ে। কবিতা-গান-ছোটগল্প-উপন্যাসসহ সাহিত্যের সব শাখাতেই তিনি অবাধে বিচরণ করেছেন। এছাড়াও চিত্রকলা ও বিভিন্ন দেশ হিতৈষণামূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তিনি। বাংলাভাষা ও সাহিত্যকে তিনি মহিমান্বিত করেছেন, গৌরবের শীর্ষদেশে পৌঁছে দিয়েছেন। বলতে গেলে তার একক প্রচেষ্টায় বাংলা সাহিত্য বিশ্বসাহিত্য সভায় মূল্যবান আসন লাভ করতে পেরেছিল। মানুষের হৃদয়ের আকুতিতে, প্রকৃতির বৈচিত্র্যময়তায় আর জীবন-নদীর বাঁকে বাঁকে তিনি এক জীবন-দেবতার অদৃশ্য আনাগোনা লক্ষ্য করে গেছেন। তাই জীবন-মৃত্যুকে তিনি অলক্ষ্যে কর্মরত সেই জীবন-দেবতার বিপুল রহস্যময় বিষয় বলে মনে করেন। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় `সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও আপন সুর/ আমার মাঝে তোমার প্রকাশ তাই এত মধুর।` রবীন্দ্র চেতনায় এই দার্শনিক ভাব-ভাবনা বাঙালি চিত্তে সঞ্চার করেছে ঈশ্বরে-মানুষে মহামিলনের আকুতি।১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৮ মে) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সঙ্কলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।এআরএস/আরআইপি
Advertisement