বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরিই দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ‘আর কান্না নয়, বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে লড়াই করতে হবে। কাঁদতে হবে না, শিগগিরই দেশে ফিরব’।প্রায় এক সপ্তাহ ওমরাহ পালনের পর লন্ডনে ফিরে যাওয়ার সময় শুক্রবার সৌদি আরবের জেদ্দা বিমান বন্দরে কান্নারত মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিদায় জানাতে আসা উপস্থিত কয়েকশ’ নেতাকর্মীকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে এ ঘোষণা দেন। শনিবার সকালে জেদ্দা বিমানবন্দরে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে এসে নেতাকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানে সাবেক ছাত্রদল নেতা রকীবুল ইসলাম বকুলকে জড়িয়ে ধরে তারেক রহমান উল্লেখিত কথাগুলো বলেন।দুবাই বিমানবন্দরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদায় জানাতে গিয়ে তারেকও কেঁদে ফেলেন। ২০১১ সালে খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্য সফরের পর গত ১৯ জুলাই দুবাই বিমানবন্দরে তাদের সাক্ষাত হয়। মদীনা ও মক্কায় গত ৭ দিন তারা একত্রে ইবাদত-বন্দেগী করেন। এ দিকে শনিবার রাতে দেশে ফিরেছেন খালেদা জিয়া। ৭টা ৫৫ মিনিটে তিনি ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ঢাকায় পৌঁছলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী বেগম জিয়াকে স্বাগত জানান।জেদ্দা থেকে জিয়া পরিবারের সদস্যারা এমিরেটসের ইকে-৮১০ ফ্লাইটে দুবাই পৌঁছেন। সেখান থেকে তারেক রহমান লন্ডন ফিরে যান। সফরসঙ্গীরা জানান, দুবাই বিমানবন্দরে তারা যখন বিচ্ছিন্ন হন সবার চোখে ছিল জল। খালেদা জিয়া নাতনি জায়মা রহমানকে জড়িয়ে ধরে কয়েক মিনিট কাঁদেন। এরপর তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমান বিদায় নেন।এর আগে, সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরে বিদায় জানাতে বিএনপির কয়েকশ’ নেতাকর্মী জড়ো হন। এ সময় অনেকে কেঁদে ফেলেন। তারেক রহমানও অশ্রসিক্ত হন এবং স্বাভাবিক হয়ে নেতাকর্মীদের ধৈর্যধারণের জন্য বলেন।গত ২০ জুলাই সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সউদি সফরে যান খালেদা জিয়া। সর্বপ্রথম মদিনায় তিনি মহানবী (সা.) এর রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। সেখানে তিনদিন অবস্থান করে ইবাদত বন্দেগিতে সময় কাটান। ২২ জুলাই রাতে মক্কায় আসেন। ওই রাতেই পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। ধর্মীয় এ সফরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেননি বললেই চলে। তবে মদীনায় আল ঈমান হোটেলে বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠকে মিলিত হন। সাংগঠনিক কিছু সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেন তারা। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তারেক রহমান। তিনি শুক্রবার মক্কার পবিত্র বায়তুল্লাহ শরিফে জুমায়াতুল বিদা নামাজ আদায় এবং বিদায়ী তাওয়াফ করেন। সফরসঙ্গীদের নিয়ে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে তারা মক্কা ত্যাগ করেন।জেদ্দা বিমানবন্দরে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে বিদায় শুভেচ্ছা জানান সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সভাপতি আহমদ আলী মুকিব ও সৌদি সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি বিএনপি নেতা আবদুর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরব সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন, পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম নান্নু, জেদ্দা মহানগর বিএনপি নেতা এমএ আজাদ চয়ন, কেফায়েতউল্লাহ চৌধুরী ও গিয়াসউদ্দিন আল মারুফ, যুবদলের পশ্চিমাঞ্চল সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন, জেদ্দা যুবদলের নেতা প্রিন্স আল লিনটন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এরশাদ আহমেদ, বিএনপি নেতা ওয়ায়েছ আহমেদ, মোজাম্মেল হোসেন রিপন, আনোয়ার জাহিদ, মোশাররফ হোসেন, আজাদ, শিপন, হানিফ সরকার, রঞ্জু আহমেদ, আবদুস শহীদ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শাহজাহান, আলমগীর হোসেন, মেহেদী হাসান প্রমুখ।
Advertisement