ইসরায়েল সরকার নিশ্চিত করেছে যে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও চার ঘন্টা বাড়ানো হয়েছে। এর আগে আজ (শনিবার) ১২ ঘন্টার এক যুদ্ধবিরতি বলবৎ হয় যা শেষ হয়ে যাবার কিছু আগে এ কথা জানানো হয়। এর মেয়াদ আরো চার ঘন্টা বাড়ানোর ফলে এখন স্থানীয় সময় মধ্যরাত পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে।
Advertisement
৮ই জুলাই থেকে শুরু হওয়া গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলো থেকে আজ ৮০টিরও বেশি মৃতদেহ বের করা হয়। ইসরায়েলি পক্ষে ৪০ জন সৈন্য এবং তিনজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এখনো জানায়নি যে তারা যুদ্ধবিরতি বাড়াবে কিনা। যুদ্ধবিরতির মেয়াদা আরো ২৪ ঘন্টা বাড়ানোর জন্য জাতিসংঘের একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য আজই ইসরায়েলের মন্ত্রীসভা বৈঠকে বসবে।
শনিবার সকালে যুদ্ধবিরতি বলবৎ হবার পর সেখানকার লোকজন জরুরি কেনাকাটার জন্য রাস্তায় নামে। কিছু দোকানপাট ও ব্যাংক খুলেছিল। ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলোয় জরুরি সেবা পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
বিবিসির ইয়ান প্যানেল জানাচ্ছেন, গাজায় ধ্বংসলীলার যে মাত্রা দেখা যাচ্ছে - তা বিস্ময়কর। শেজাইয়া এলাকায় সব ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে, ১৬০ ফুট পর্যন্ত উঁচু ধ্বংসস্তুপের ওপর গাড়ি উল্টে পড়ে আছে এমন দৃশ্যও দেখা গেছে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক মতৈক্যের ভিত্তিতে শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
ইসরায়েল বলেছে, সাময়িক এই যুদ্ধবিরতিটি একটি মানবিক সুযোগ, তবে এর মধ্যেও তারা ফিলিস্তিনিদের ব্যবহৃত সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংসের অভিযান চালিয়ে যাবে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ইতোপূর্বে গাজা থেকে যাদের সরে যেতে বলা হয়েছে তাদের ফিরে আসা উচিত হবেনা। আঘাত করা হলেই পাল্টা আঘাত করা হবে।
অন্যদিকে গাজায় দীর্ঘমেয়াদী একটি যুদ্ধবিরতির পন্থা বের করার জন্য বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের এক বৈঠক প্যারিসে শুরু হয়।এতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
Advertisement
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সহ বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ, তুরস্ক এবং কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এতে যোগ দিচ্ছেন। এর আগে মি. কেরির আনা সাত দিনের যুদ্ধবিরতির এক প্রস্তাব ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করে।
প্যারিস থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, মনে হচ্ছে যুদ্ধরত দুই পক্ষ ইচ্ছুক না হওয়া পর্যন্ত একটা দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি হয়তো হবে না।
ওদিকে গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের প্রতিবাদে পশ্চিম তীরে যে বিক্ষোভ হয়েছে সে সময় ইসরায়েলি নিরাপত্তাকর্মীদের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
বেইত ফাজর নামের এলাকায় এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পার্শ্ববর্তী বেথেলহোমে নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে পাথর ও পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করা হলে জবাবে রাবার বুলেট ছোঁড়ে ইসরায়েলি নিরাপত্তা রক্ষীরা। রামাল্লা, নাবলুস এবং হেবরণের কাছে গ্রামেও বিক্ষোভ হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন বলেছেন, আর সময় নেই। ৪৭ বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ এবার চিরতরে বন্ধ করার সময় এসেছে। বিবিসি