যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ট্রেন চলাচল এবং সরিষাবাড়ীতে ট্রেন ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।এদিকে রোববার দুপুরে ইসলামপুর উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- নয়াপাড়া গ্রামের মারফত আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম এবং চিনারচর আকন্দপাড়া গ্রামের উজ্জ্বলের স্ত্রী মরিয়ম বেগম।বন্যার পানি বিপদসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জামালপুর সদর, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ী ও বকশীগঞ্জ উপজেলার তিন শতাধিক গ্রামের তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। বসতঘরে বন্যার পানি ঢুকে যাওয়ায় বিভিন্ন বাঁধ এবং উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বন্যাদুর্গতরা। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যাদুর্গত ৫০০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট চলছে। নতুন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় জেলার ৭৮৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ১৭ হাজার ৪৫ হেক্টর জমির ফসল। এদিকে বন্যার পানিতে রেললাইন তলিয়ে যাওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ এবং শনিবার রাত থেকে জামালপুর-সরিষাবাড়ী-বঙ্গবন্ধু পূর্বপাড় পর্যন্ত লাইনে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে সরিষাবাড়ীর ভাটারা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া এলাকায় বন্যার পানিতে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় জামালপুর-সরিষাবাড়ী সড়ক যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গত এলাকায় এখন পর্যন্ত ৭৯২ মেট্রিক টন চাল, ৪ হাজার ৭০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্গত এলাকায় রুটি ও খিচুরি বিতরণ করা হচ্ছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় যে পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এ ব্যাপারে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শাহাবুদ্দিন খান জানিয়েছেন, বন্যাদুর্গতদের জন্য শুকনা খাবার বিতরণে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে দুর্গতদের জন্য বরাদ্দ আরো বাড়ানো হবে। শুভ্র মেহেদী/এসএস/এমএস
Advertisement