ঢাকাই ছবির সোনালি দিনের চিত্রনায়িকা ববিতা। প্রায় চারশ ছবিতে ববিতা অভিনয় করেছেন। কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর স্বীকৃতি লাভ করার গৌরব অর্জন করেন। শুধু তাই নয়, ববিতা হ্যাট্রিক করে একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। তাকে বলা হয় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আন্তর্জাতিক মানের অভিনেত্রী। কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে তিনি ঢাকাই ছবিকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বজুড়ে।
Advertisement
তবে এখন তিনি অনেকটাই অনিয়মিত রূপালি পর্দায়। তার একমাত্র পুত্র অনিক কানাডায় পড়ালেখা করছেন। সেখানেই কাটে তার বেশিরভাগ সময়। মাঝে মধ্যে ঢাকায় আসেন। বর্তমানে ববিতা ঢাকাতেই রয়েছেন। গতকাল ছিল এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। জন্মদিনে সকলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন এই অভিনেত্রী। নিজের ৬৩তম জন্মদিন পালন ও চলচ্চিত্রের সমকালীন ভাবনা নিয়ে ববিতা কথা বলেছেন জাগো নিউজের বিনোদন বিভাগে...জাগো নিউজ : কেমন আছেন? ববিতা : আলহামদুলিল্লাহ। শারীরিকভাবে খুব ভালো আছি। মনটা ভালো নেই। প্রিয় মাতৃভূমিকে খামচে ধরেছে মৌলবাদের শকুন। মানুষের মৃত্যু ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে। দেশটা কবে স্থিতিশীল হবে কে জানে। আল্লাহ যেন সবাইকে রক্ষা করেন, এই দেশকে রক্ষা করেন।জাগো নিউজ : দেখতে দেখতে জীবনের ৬২টি বসন্ত কেটে গেল। নতুন বসন্তের অপেক্ষায় এখন। কেমন কাটল এবারের জন্মদিন?ববিতা : গত কয়েক বছর কানাডায় ছেলে অনিকের সঙ্গে জন্মদিন পালন করেছি। এবার সে সঙ্গে নেই। ওকে খুব মিস করেছি। তবে স্কাইপে কথা হয়েছে। পরিচিতজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দুপুরের পর বাসায় এসেছিলেন বিশেষ কয়েকজন অতিথি। তাদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছি। ছিলেন আমার দুই বোন সুচন্দা বুজি ও চম্পা। বলা চলে ঘরোয়া আয়োজনে ভালোবাসার সমুদ্রেই কেটেছে দিনটি।জাগো নিউজ : এবারের জন্মদিনে প্রথম শুভেচ্ছাটা কার কাছ থেকে পেয়েছেন? ববিতা : আমার ছেলে অনিকের কাছ থেকে। সে আমার জন্মদিনের প্রথম প্রহরে কানাডা থেকে ফোন করে আমাকে উইশ করেছে।জাগো নিউজ : ছোটবেলায় জন্মদিন পালন করতেন? কোন স্মৃতি কি আপনাকে আজও নাড়া দেয়? ববিতা : শৈশবে ঘটা করে আমার জন্মদিন পালন করা হতো না। তবে জন্মদিনের একটা স্মৃতি আমার সবসময় মনের মধ্যে উঁকি দেয়। আমি তখন অনেক ছোট। স্কুলে ভর্তি হইনি। একবার আমার বার্থডে’র দিন বাবা একটা ইংরেজি খবরের কাগজ হাতে নিয়ে বাসায় এসেছিলেন। তারপর আমি সেটা নিয়ে উল্টো করে জোরে জোরে পড়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আমি তো তখন ইংরেজি সেভাবে পড়তে পারতাম না। বাবা সেটা দূর থেকে খেয়াল করেছিলেন। এরপর তিনি আমাকে একটা ডিকশনারি কিনে দেন। তাতে লিখে দিয়েছিলেন, ‘মা তুমি অনেক বড় হও, তোমার ইংরেজি শেখার আগ্রহ আমাকে মুগ্ধ করেছে। যখনই ইংরেজি শব্দের অর্থ বুঝতে না পারবে তখনই এটার সাহায্য নেবে। এটা তোমার সহায়ক হবে।’ বাবার দেয়া সেই উপহারটা আজও আমি যত্ন করে গুছিয়ে রেখেছি। জন্মদিনে এই উপহারটা এখনো আমার জীবনের বেস্ট গিফট। সেই স্মৃতি সেরা স্মৃতি হয়ে আছে।জাগো নিউজ : ছোটবেলায় নায়িকা হওয়ার ইচ্ছে ছিল?ববিতা : না না। একদমই নায়িকা হওয়ার ইচ্ছে ছিল না। আমার মা ছিলেন ডাক্তার। আমি তার সহকারী হিসেবে টুকটাক কাজ করতাম। তখন ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবো। আমার বড় বোন সুচন্দা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন। তার সঙ্গে শুটিং দেখতে একবার কক্সবাজার গিয়েছিলাম। শুটিং দেখে আমি খুব বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। গরমে রোদের মধ্যে তারপর পানিতে ভিজে বারবার শট দিচ্ছিলেন বুজি। আমি দূর থেকে ওসব দেখে খুব রেগে যাচ্ছিলাম। মনে মনে বলছিলাম এত ঝামেলা পোহায়ে কেউ এমন করে ছবিতে কাজ করে! আমি কখনোই এমনটা করবো না।জাগো নিউজ : তবুও চলচ্চিত্রে এলেন। এবং ইতিহাস করে দিলেন। কীভাবে আগমন?ববিতা : তারপরের ঘটনাটা অনেক মজার। আমার দুলাভাই মানে সুচন্দা আপার স্বামী প্রয়াত বিখ্যাত নির্মাতা জহির রায়হান তার ‘সংসার’ ছবির জন্য অল্প বয়সী মেয়ে খুঁজছিলেন। তিনি আমাকে ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব দেন। আমি রাজি ছিলাম না। তারপর মা-বোনসহ পরিবারের সবাই খুব করে বোঝালেন। উপায় না পেয়ে রাজি হয়েছিলাম। ছবিতে রাজ্জাক ভাই আমার বাবা, সুচন্দা বুজি মা ছিলেন। এরপর আড়াই বছর কেটে যায়। পড়ে জহির ভাই আবারো তার নতুন ছবির জন্য শবনম আপাকে অভিনয় করাতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু তার শিডিউল পেতে বেগ পেতে হয়। ছবির নাম ছিল ‘জ্বলতে সুরজ কি নিচে’। সে ছবির প্রযোজক বিখ্যাত ক্যামেরাম্যান আফজাল চৌধুরী বললেন, ‘এত দুশ্চিন্তা করছ কেন? তোমার ঘরেই তো নায়িকা আছে।’ তিনি আসলে আমার কথাই বলছিলেন। জহির ভাই যখন বললেন না করে দিলাম। আগের মতোই মা-বোন বোঝাতে লাগলেন, ‘এই ছবিতে নায়িকা হবে, নাদিমের সঙ্গে অভিনয় করবে। করো।’ বললাম, এক শর্তে করতে পারি। এটাই হবে শেষ! কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত ছবির কাজ শেষ হয়নি। এরপর জহির ভাই আমাকে নায়িকা করে রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে আরো একটি ছবির নাম পরিকল্পনা করেন। ছবিটি করতে গিয়ে খুব অসুবিধায় পড়েছিলাম। কারণ আগের ছবিতে রাজ্জাক ভাই ছিলেন আমার বাবার চরিত্রে। তার সঙ্গে প্রেমের দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে নিজের কাছে খুব অসুবিধা হচ্ছিল। ওই ছবিটা হিট হয়। খ্যাতি চলে আসলো। সবাই প্রশংসা করছে অভিনয়ের। আমিও এই শিল্পের প্রতি দুর্বল হয়ে গেলাম। পরের গল্প সবার জানা।জাগো নিউজ : আপনার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ছিল কোন ছবিটি?ববিতা : আমি অভিনয় করেছি প্রায় চার শতাধিক ছবিতে। সবগুলো চলচ্চিত্রই আমার টার্নিং পয়েন্ট। কেননা, একটি না হলে অন্যটি হতো না। তবে আমাকে তৃপ্তি দিয়েছে অস্কারজয়ী চলচ্চিত্রকার, উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্রের অহংকার সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনী সংকেত’ ছবিটি। এই ছবিটি সারা বিশ্বের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে আমাকে পরিচিতি দিয়েছে। এছাড়া আমাদের দেশের ‘মাইলস্টোন’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নয়নমণি’, ‘বসুন্ধরা’, ‘ডুমুরের ফুল’, ‘আলোর মিছিল’, ‘বাদী থেকে বেগম’, ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘দহন’ ইত্যাদি ছবিও আমাকে ইতিহাসে জায়গা করে দিয়েছে বলে মনে করি আমি। জাগো নিউজ: একজন অভিনেত্রী হিসেবে আপনি পুরোপুরি সফল। এই সাফল্যের মূলমন্ত্র কি?ববিতা : ধৈর্য-সততা-পরিশ্রম আর অভিনয়কে ভালোবাসা। অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে মূল্যায়ন ও শ্রদ্ধা করা। আমি অনেক ধৈর্য ধরেছি, সততার সঙ্গে কাজ করেছি, পরিশ্রম করেছি। এছাড়া চরিত্র নিয়ে আমাকে অনেক সাধনা করতে হয়েছে। এমনও হয়েছে প্রযোজকের আর্থিক দিক বিবেচনা করে আমি অনেক সুপারহিট ছবিতে কাজ করেছি কিন্তু কোনো পারিশ্রমিক নেইনি। সবসময় নিজের চরিত্রটাকে প্রাধান্য দিয়েছি। কোনো সময় পারিশ্রমিক নিয়ে ভাবিনি। যে চরিত্রে কাজ করে দর্শককে মুগ্ধ করতে পারবো বলে ধারণা করেছি, সেই চরিত্রের জন্য টাকা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। অভিনয় আমার পেশা। অবশ্যই এখানে আমাকে রোজগার করতে হবে। খ্যাতি আর জনপ্রিয়তার সাথে মূল্যও বাড়াতে হবে। তবুও এটা একটি শিল্প। শিল্পী হিসেবে নিজের মনের কিছু খোরাক থাকে। সেই খোরাক মিটায় এমন চরিত্রের জন্য কম্প্রোমাইজ করতেই হবে।জাগো নিউজ : দেশ-বিদেশে অনেক নায়কদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তাদের মধ্যে সেরা বা আপনার পছন্দের নায়ক কে? ববিতা : আমি বিভিন্ন দেশের অনেক বড় বড় অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছি। সবার সঙ্গে কাজ করেই ভালো লেগেছে। কেউ কেউ আমাকে গর্বিতও করেছেন। আমাদের নায়করাজ রাজ্জাক ভাই, ফারুক, সোহেল রানাসহ আরো অনেকের অভিনয় ও ব্যক্তিত্ব আমাকে আজো মুগ্ধ করে রেখেছে। ভারতের সৌমিত্র দা’র মতো নায়কের সঙ্গেও আমি কাজ করেছি। তাকে নিয়ে বলার নতুন কিছু নেই। তবে নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে আমার স্বপ্নের বা পছন্দের নায়ক ছিলো জাফর ইকবাল। কারণ তার কিছু জিনিস আমাকে একটু বেশিই মুগ্ধ করতো। সে যেমনি সুদর্শন ছিলো, তেমনি ছিল তার অভিনয়ের সাবলীলতা, কণ্ঠ, ব্যক্তিত্ব, ফ্যাশন সচেতনতা, রুচিবোধ। জাফর ইকবাল খুব ভালো ইংলিশ গান গাইতে পারতো। গিটার বাজিয়ে ওর মুখে ইংলিশ গান শোনাটা আমাদের সময়কার যে কোনো মেয়ের জন্য স্বপ্নের একটি মুহূর্ত। আমি বলবো ওর মতো সম্পূর্ণ কোনো নায়ক আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আসেনি। সব্যসাচি ছিলো ও। জাফর ইকবালের অকাল প্রয়াণ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত করেছে।জাগো নিউজ : এখনকার ছবিগুলো দেখা হয়? ববিতা : না, খুব বেশি দেখা হয় না। টানে না। এত সমালোচনা শুনি আর ইচ্ছে করে না। আসলে সব যুগের কাজ নিয়েই সমালোচনা হতো, হয়েছে। তবে পাশাপাশি আলোচনাটাও ছিলো। কিন্তু আমাদের এখানে সমালোচনাটাই একতরফাভাবে হয়। তার মানে বুঝতে হবে এবং চলচ্চিত্রের মানুষদের এটা মানতেও হবে আলোচিত হবার মতো চলচ্চিত্র তারা নির্মাণ করতে পারছেন না। রাজ্জাক-ববিতাকে ছবিতে মা-বাবা করে জুটি বানালেই ছবির গল্প ভালো হয়ে যাবে না। মানুষকে তার জীবনের গল্প উপহার দিতে হবে। কেউ অন্যের গল্প শুনতে চায় না। মানুষ যদি একটি ছবির চরিত্রে নিজেকে খুঁজে না পায় তবে কেন সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ছবির জন্য বসে থাকবে? সাম্প্রতিক বেশ কিছু ছবিতে কাজ করেছি। কিন্তু অনেস্টলি বলছি এসব ছবির গল্প দুর্বল। কাজ করতে করতেই শিল্পীরা বুঝতে পারছেন এটা কেউ গ্রহণ করবে না। ইন্ডাস্ট্রি এখন এক-দুজনকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। গল্প, চরিত্র- সবকিছুই একজন ঘিরে হয়। একজনকে ঘিরে হতে পারে যদি সেই একজন সর্বজনের কাছে গ্রহণযোগ্য হন। এটা আমাদের ভাবতে হবে। কিন্তু আমরা তা ভাবছি না। তোষামোদিতে মেতে উঠেছি। এটা পুরো যা শিল্পের জন্য হতাশার। আর এজন্যই সিনিয়ররা এখন কাজের আগ্রহ পান না। একজন আলমগীর, সোহেল রানা বা ইলিয়াস কাঞ্চন ইচ্ছে করলেই যেমন তেমন চরিত্রে হাজির হতে পারেন না। দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ার বলো আর অভিজ্ঞতাই বলো, একটা দায়বদ্ধতা কিন্তু থাকে বাবা। তবে গেল রোজার ঈদে বেশ কয়টি ছবি নিয়ে প্রশংসা শুনেছি। এটা আমাদের জন্য আশার খবর। ছবিগুলো দেখবো আমি। ভালো ছবিতে কাজ করা যেমন নেশা, ভালো ছবি উপভোগ করাটাও একটা নেশা।জাগো নিউজ: বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্রের অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে আপনার মূল্যায়ন? ববিতা : মূল্যায়নের কথা খুব বেশি জানাতে চাচ্ছি না। এসব না বলাই ভালো। অনেকেই বলে থাকেন সিনিয়ররা কেবল সমালোচনা করেন। কেন করেন সেটা তারা উপলব্দি করেন না। ইন্ডাস্ট্রি এখন শাকিবনির্ভর। এটা ভালো কোনো কথা নয়। যেখানে রাজ্জাক ভাই ছিলেন সেখানে আলমগীর, জসীম, উজ্জ্বল, সোহেল রানারাও কাজ করেছেন। জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চনরা একসঙ্গে ছবিতে অভিনয় করেছেন। শাহরুখ খানের প্রতিদ্বন্দ্বী সালমান-আমির। আসলে সবখানেই একটা গণতন্ত্রের চর্চা থাকা চাই। সবখানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা চাই। কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিবই সব। স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক অনেক প্রভাব পড়ছে। নতুনদের নিয়ে নির্মাতা ও প্রযোজককে কৌশলী হতে হবে। তাদের জন্য মৌলিক গল্পের চমক জাগানিয়া ছবি বানাতে হবে। রিয়াজ-শাবনূর ও পূর্ণিমার আবারো চলচ্চিত্রে নিয়মিত হওয়া উচিত। এই তিন তারকার জুটি খুব জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তা কোনোদিন ফুরায় না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ব্যবহার করতে জানলে চিরকালই জনপ্রিয়তা থাকে। তার অনেক প্রমাণ আছে। শাহরুখ-কাজল জুটির জনপ্রিয়তা বেচে ‘দিলওয়ালে’ নামে একটা অচল গল্প চালিয়ে দিয়েছে বলিউড। সেখানে কিন্তু তারা ‘কুচ কুচ হোতা হে’ ছবির মতো কলেজ পড়ুয়া না। তাই বলছি, রিয়াজ-শাবনূর বা রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটিকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারলে ইতিবাচক কিছু হতেই পারে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এবং ওদের জুটির ছবির আলাদা কদর আছে। তাছাড়া বাকি অনেকেই ভালো আছেন। অনেক নতুনরা আশা জাগাচ্ছেন। তাদের অভিনয়ও ভালো। একটু সুযোগ প্রয়োজন। কিন্তু অধিকাংশই ছবির গল্প চরিত্র নিয়ে না ভেবে পারিশ্রমিক নিয়ে আগে চিন্তা করেন। এটা কোনো শিল্পীসুলভ আচরণ না। জাগো নিউজ : এখন তো যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। সেসব নিয়ে কিছু বলুন... ববিতা : যৌথ প্রযোজনায় আগেও ছবি নির্মিত হয়েছে। তবে এখনকার ছবিগুলোতে নানা অনিয়মের কথা কানে আসে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয় না। একশ্রেণির পয়সাওয়ালা লোক ইন্ডাস্ট্রিকে নিজের পকেটে নিতে চাচ্ছে। যৌথ প্রযোজনায় ছবির বিপক্ষে আমি নই। তবে সেটা অবশ্যই হতে হবে নীতিমালা মোতাবেক। তাছাড়া বর্তমানে অনিয়মের মধ্য দিয়ে ছবি আমদানি করারও সমালোচনা হচ্ছে। আমার মনে হয় অনেক সমস্যা আছে, সেগুলো সাধারণ জনগণ জানে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি নতুনদের এ অনিয়ম রোধে এগিয়ে আসতে হবে। চলচ্চিত্রের সঙ্গে গণমানুষকে বেঁধে রাখতে হবে। আজ যে ছবিটি অনিয়ম করে এদেশে চলছে, তার জন্য যদি দেশের মানুষ মাঠে নামতো তবে চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো। কিন্তু কেন মানুষ নামবে? এখন তো চলচ্চিত্র মানুষ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আমাদের তাই গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় শাখা হিসেবে গণমানুষকে কাছে টানতে হবে। নিজের তারকা হবার পাশাপাশি পুরো ইন্ডাস্ট্রিটাকে তারকা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। জাগো নিউজ : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সবসময় ভালো থাকুন, প্রাণবন্ত থাকুন। আপনার হাত ধরে আরো অনেক সাফল্য আসুক আমাদের চলচ্চিত্রে.....ববিতা : তোমাকেও আদর দিলাম। ভালো থেকো। জাগো নিউজকে ধন্যবাদ। সবাই সাবধানে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। জয় হোক মানুষের, জয় হোক ঢাকাই চলচ্চিত্রের। এনই/এলএ/এমএস