জাতীয়

যে কাজে ব্যবহৃত হবে পুরনো কারাগার

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড থেকে স্থানান্তর করে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ১০ এপ্রিল নবনির্মিত এই কারাগারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার এবং শনিবার ধাপে ধাপে কেরানীগঞ্জ পাঠানো হবে আসামিদের। কারাগারের এই ১৭ একরের ফাঁকা জায়গায় কি হবে? কোন কাজে লাগানো হচ্ছে নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারের জমিকে? বিষয়টি জানতে অনেকেই কৌতূহল নিয়ে বসে আছেন নিশ্চয়ই। নাজিমুদ্দিন রোডের এই পুরান কারাগার নিয়ে সরকারের রয়েছে নানা পরিকল্পনা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুরনো এই কারাগারটির সিংহভাগ জমি নিয়ে তৈরি করা হবে কারা কল্যাণ ভবন। এই ভবনে থাকবে সুইমিংপুল, ব্যায়ামাগার, বহুতল পার্কিং, আধুনিক শপিং কমপ্লেক্স ও সিনেপ্লেক্স। ভবনের বাইরে থাকবে সবুজ উদ্যান। বাকি জমির একাংশ নিয়ে তৈরি হবে একটি আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার। কারাগারের সঙ্গে থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের পাশে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হবে। অবশিষ্ট স্থানের একটি অংশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও চার নেতার পৃথক দুটি স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এই কারাগারের তিনটি কক্ষে বন্দী করে রাখা হয়েছিলো জাতীয় চার নেতাকে। সেখানেই তাদের হত্যা করা হয়। সেই সেলকে ঘিরেই মূলত ৪ নেতার জাদুঘরটি তৈরি করা হবে। বাকি জমিতে নির্মাণ করা হবে কারা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, কারাগার স্থানান্তরের পর খালি জায়গার পরিকল্পনা প্রস্তুতের জন্য একটি প্রতিযোগিতা করা হবে। প্রতিযোগিতায় যাদের ডিজাইন প্রথম স্থান অর্জন করবে তাদের ডিজাইন অনুযায়ী পরবর্তী নির্মাণ শুরু করা হবে। আগামী ১ মাসের মধ্যে এ বিষয়ে পত্রিকায় একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। এর আগে, কারাগারের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা উভয়ই বিঘ্নিত হচ্ছে উপলব্ধি করে ১৯৮০ সালের দিকে এটি স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হয়। একই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কাউন্সিলের একটি সভায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সরানোর বিষয়টি প্রথম উঠে আসে। ১৯৯৪ সালে একে চূড়ান্তভাবে সরিয়ে দুটি কারাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে একটি গাজীপুরের কাশিমপুর ও অন্যটি কেরানীগঞ্জের। অবশেষে ২০০৬ সালে একনেকে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার হয় কেরানীগঞ্জের নবনির্মিত কারাগারের। এরপর থেকেই শুরু হয় জমি অধিগ্রহণের কাজ। বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১১ সালের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু পরে তিন দফায় প্রকল্প মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১৭ সাল পর্যন্ত। ২০০৭ সালে কারা এলাকায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়। মূল কারাগার ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। এআর/এএস/জেএইচ/এমএস

Advertisement