সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সামরিক বাহিনীর জন্য প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোর সঙ্গে দেশের সাংবাদিক কর্মচারীদের বেতন-ভাতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও সমন্বয়ের জন্য নতুন ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। গত ৩ জানুয়ারি শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী পরিষদের সভায় এ দাবি জানানো হয়।বিএফইউজে সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল তাদের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।সারাদেশের অঞ্চলভিত্তিক গণমাধ্যমচিত্র তুলে ধরে বক্তৃতা করেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, বগুড়া, দিনাজপুর ও নারায়নগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ।সভায় বক্তারা বলেন, যেহেতু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং সাংবাদিক কর্মচারীরা একই সমাজে বসবাস এবং একই বাজার ব্যবস্থার মধ্যে দিনযাপন করেন, সেহেতু সবার আয়ের মধ্যে একটি সমন্বয় থাকা প্রয়োজন।তারা বলেন, সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো ঘোষণার প্রেক্ষিতে দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের বর্তমান বেতন-ভাতা পর্যালোচনা করে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই অবিলম্বে বেতন বোর্ড গঠন করে আগামী জুনের মধ্যেই যাতে বোর্ডের সুপারিশ কার্যকর করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।দেশের অনেক সংবাদপত্রে ৮ম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশ কার্যকর না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, যে সকল সংবাদপত্রে এখনও ৮ম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি, আইন লংঘনকারী সে সকল সংবাদপত্রে সরকারী ক্রোড়পত্র বন্ধ, মালিক-সম্পাদকদের এক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করার পাশাপাশি মালিক-সম্পাদকরা যাতে সরকারের কোন পর্যায়ে সফরসঙ্গী হওয়াসহ কোন ধরণের সুযোগ সুবিধা না পায়, তা নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়।এ সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়মিত বেতন ভাতা না দেয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএফইউজে নেতৃবৃন্দ শ্রম আইন না মেনে চাকুরীচ্যুতির জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সভায় সাংবাদিক-শ্রমিক কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে নেতৃবৃন্দ শ্রম আইন সংশোধনেরও দাবি জানান।সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবি করে সাংবাদিক নেতাগণ বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ মন্ত্রীরা এসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সহায়তা দিতে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ উপ-কমিটি সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সরকারকে সকল ধরনের সহায়তা দেবে।নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করে বলেন, ১৯৭৪ সনের আইন সংস্কারের জন্য সকল প্রস্তাবনা জমা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে কার্যকর হলে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম কর্মীদের ওয়েজ বোর্ড গঠনের জটিলতার অবসান হবে।তারা আরো বলেন, ৮ম ওয়েজ বোর্ডের অসঙ্গতি দূর করার জন্য প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং মন্ত্রী বলেছেন দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন হয়েছে, তবে এখনও ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়নি। প্রেস কাউন্সিল ও প্রেস ইনস্টিটিউট দীর্ঘদিন চলছে বোর্ড ছাড়া। এ সকল প্রতিষ্ঠানের কাজে আরও গতি আনার জন্য সভায় মন্ত্রণালয়ের প্রতি বোর্ড গঠন প্রয়োজন।সম্প্রচার নীতিমালা বিষয়ক কমিটি গঠনের জন্য সভায় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিশ্চয়ই উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত এ কমিটি উপযুক্ত সময়ে একটি পরামর্শ দেবে।সভায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিএফইউজে’র বার্ষিক সাধারণ বা প্রতিনিধি সভা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে অঙ্গ সংগঠনগুলোকে প্রতিনিধি তালিকা পাঠানোর জন্যও অনুরোধ জানানো হয়। -বাসসআরএস
Advertisement