দেশজুড়ে

শরীয়তপুরে পদ্মার ভাঙনে গৃহহীন ৫০০ পরিবার

শরীয়তপুরের জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২১টি গ্রাম পদ্মা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় এক মাস ধরে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও ১০দিনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০০ পরিবার। মসজিদ, মাদরাসা, প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবনও ঝুকিমুক্ত নয়। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিভিন্ন এনজিও ও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়িসহ মীর আলী মাদবর কান্দি, তাইজদ্দিন মাদবর কান্দি, রঞ্জন ছৈয়াল কান্দি, মৃধা কান্দি, কোতোয়াল কান্দি, মোখলেছ বেপারী কান্দি, সরদার কান্দি, মুন্সী কান্দি, পালের চর ইউনিয়নের সরদার কান্দি, মাঝি কান্দি, বিলাশপুর ইউনিয়নের আকন কান্দি, মেছের চেয়ারম্যানের কান্দি, মোহনখার কান্দি, ভুইয়া কান্দি নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর বাজার, সুরেশ্বর লঞ্চঘাট, সুরেশ্বর মাজার, সুরেশ্বর কলেজ, মুলফৎগঞ্জ হাসপাতাল, মুলফৎগঞ্জ বাজার, মুলফৎগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসা, ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর গৌরঙ্গ বাজার যে কোনো সময় বিলীন হতে পারে।ভাঙন কবলিত এলাকাবাসী জানায়, ৫ দিন আগে আমার বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি নিয়ে কোথায় যে থাকবো বুঝে উঠতে পারছি না।  আমাদের ঘড়-বাড়ি ভেঙে গেল তাই সবকিছু নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছি। আমাদের বিপদের দিনে চেয়ারম্যান, মেম্বার বা সরকারের কোনো সহায়তা পেলাম না। আমরা বোধ হয় দেশের বোঝা, আমাদের বাঁচা মরায় কার কি আসে যায়। জুলহাস ফকির, মিরাজ কোতোয়াল ও লাল চাঁন জানায়, আপনারা আমাদের জন্য কি করবেন। ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপিই আমাদের খবর নেয় না। গত ৩ বছরে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এদের কেউই আমাদের খোঁজ খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। অন্যান্য এলাকায়ও নদী ভাঙন হয়েছে আর তারা সরকারি সাহায্য সহায়তা পেয়েছে। আমাদের এলাকায় কোেনো সাহায্য পৌঁছে না। বাক প্রতিবন্ধী মনির হোসেন ছৈয়াল, শিরিন আক্তার জানায়, নদীর মাঝখানে তাদের বসতবাড়ি ছিল। আজ মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।আম্বিয়া বেগম জানায়, আমাদের বিপদে মেম্বার, চেয়ারম্যন পাশে থাকলেও সাহস পেতাম। তাদের কাছে তো আমরা সাহায্য চাইতাম না। তাদের কোনো খোঁজ খবরও নেই। আমাদের পোড়া কপাল পোড়াই রইল, দোষ দিমু কার। এখন একজনের বাড়িতে পাটনা দিছি। বেশি দিন ওই বাড়িতে থাকতে পারব না।বড়কান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন, আমার বাড়িও ভাঙন কবলিত। আমার ইউনিয়নে ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিয়েছি।জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। সরকারি কোনো ত্রাণ বা সহায়তা পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করবো। ছগির হোসেন/এসএস/পিআর

Advertisement