নিখোঁজের তিন দিন পর মঙ্গলবার বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডাচ্-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি হাসান খালেদের লাশ। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীর এ ধরনের করুণ মৃত্যু দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক দিকটিকেই তুলে ধরে। এই অবস্থা মানুষের মধ্যে আতঙ্কের জন্ম দেয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তৈরি হয় অনাস্থা। কাজেই যে কোনো মূল্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিয়ে পুলিশকে এগোতে হবে। গত শনিবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন হাসান খালেদ। নিখোঁজ হওয়ার পর ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল তার পরিবারের পক্ষ থেকে। তাকে অপহরণ করা হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও ওই ডায়েরিতে উল্লেখ বলা হয়েছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় তিন দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পারেনি। একজন মানুষ নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবারের মানসিক অবস্থা কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। এর মানবিক দিকটাকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক থেকেও এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ক্ষেত্রেই যদি পুলিশের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঔদাসীন্য কিংবা অক্ষমতার পরিচয় দেওয়া হয় তাহলে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে তো আরো ভয়াবহ অবস্থা হবে। নিখোঁজ হওয়ার পর উদ্ধার তৎপরতা জোরদার হলে হয়তো ব্যবসায়ী হাসান খালেদকে জীবিত উদ্ধার করা যেত। এবং সেটিই ছিল পুলিশের দায়িত্ব। সেটি পালনে তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এটা ঠিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে পুলিশকে এ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। কিন্তু জঙ্গিদের উদ্দেশ্যও তো এটিই যে তারা পুলিশকে ব্যস্ত রেখে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। কাজেই জঙ্গি দমনের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলার দিকেও নজর দিতে হবে। শুধু ব্যবসায়ী হাসান খালেদ নন গত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।এ ব্যাপারে পুলিশি তৎপরতা বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ী হাসান খালেদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনসহ দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অপরাধীদের অপতৎপরতা বন্ধে আরো সক্ষমতার পরিচয় দিতে হবে পুলিশকে। জঙ্গিদমনসহ সকল অপতৎপরতা রোধ করে মানুষের মধ্যে স্তস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। এইচআর/এবিএস
Advertisement