বিশেষ প্রতিবেদন

ইডিসিএলে সিন্ডিকেট ব্যবসা ভেঙে শক্ত হাতে হাল ধরেছেন তিনি

দেশের একমাত্র সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)-এর সিন্ডিকেট ব্যবসা ভেঙে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে শক্ত হাতে হাল ধরেছেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অধ্যাপক ডা. এহসানুল কবির।এক সময় হাতে গোনা কয়েকজন সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ইডিসিএলে ওষুধের কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতেন। প্রতিযোগিতা না থাকায় খেয়াল খুশি মতো অতিরিক্ত দামে কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। কিন্তু বর্তমান এমডি সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ঠিকাদারদের প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি কেনাকাটার খরচ বহুলাংশে কমিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক সময় প্রতি টন পটাশিয়াম ক্লোরাইড ১ হাজার ৪শ ৯০ ডলার, গ্লুকোজ অ্যানহাইড্রোস ৯শ ১০ ডলার, ট্রাইসোডিয়াম সাইট্রেট ৯শ ৫০ ডলার, সেফট্রিএকজোন সোডিয়াম ১শ ২৮ ডলার, সিপ্রোপ্রক্সাসিলিন হাইড্রোক্লোরাইড ৩১ দশমিক ৫ ডলার ও আইএসও প্রোপাইল অ্যালকোহল ২ হাজার ৭শ ৭০ ডলারে ক্রয় করা হতো। সিন্ডিকেট ব্যবসা ভেঙে দেয়ায় বর্তমানে এ সব কাঁচামালের মূল্য কমে প্রতি টন যথাক্রমে ৯শ ১০ ডলার, ৫শ ৯৮ ডলার, ৬শ ৪৫ ডলার, ৯১ দশমিক ৩৫ ডলার, ২১ দশমিক ৬ ডলার ও ২ হাজার ৮২ ডলারে নেমে এসেছে।                                        

Advertisement

                               ইডিসিএল (২য় পর্ব)

শুধু কেনাকাটায় ব্যয় কমিয়েই নয়, কর্মকর্তা কর্মচারীদের সরকারি পে-স্কেলে বেতনভাতা বৃদ্ধি, ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদান, বার্ষিক তিনটি বোনাস প্রদান, শতকরা ৫ ভাগ ডিভিডেন্ড ঘোষণা, আবাসিক সুযোগ সুবিধা ও ক্যান্টিনে কম খরচে উন্নতমানের খাবার খাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মন জয় করে প্রতিষ্ঠানটিকে সুচারুভাবে পরিচালনার পথ সুগম করেছেন বর্তমান এমডি এহসানুল কবির। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিস (জিএমপি) নির্দেশনা অনুসরণ করে পর্যায়ক্রমে ওষুধ কারখানার সংস্কার কাজ করে চলেছেন তিনি। শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নেয়া দেড় ডজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শক্ত হাতে দমন অর্থাৎ চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। জানা গেছে, বর্তমানে ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত এই ব্যক্তি একাধারে চিকিৎসক নেতা ও সফল অধ্যাপক। বর্তমান বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এবং একজন সফল চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ। বর্তমান পদে যোগদানের আগে তিনি বেসরকারি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শকে সদা বুকে ধারন করে চিকিৎসক রাজনীতিতে সদা সোচ্চার এই চিকিৎসক নেতাকে প্রায় দু’বছর আগে ইডিসিএলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া গুরুদায়িত্ব ও বিশ্বাসের মূল্য দিতে নিত্যদিন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। সোমবার বিকেলে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে ডা. এহসানুল কবির ইডিসিএলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, সিন্ডিকেটের ব্যবসা ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি সকল ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষুব্ধ মহলটি তার নামে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা তাকে বিশ্বাস করে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেই দায়িত্ব পালনে তিনি সদা তৎপর থাকবেন। কেউ তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ দেখাতে পারলে তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগ করবেন বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। ডা. এহসানুল কবির বলেন, একটি মহল নিয়মিত অফিস করি না বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু বোকার স্বর্গে বাস করা ওই কুচক্রী মহল কি জানেন না গুরত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটিতে একদিন ফাইল সই না করলে অনেক কাজ আটকে থাকে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে এমডি হিসেবে যোগদানের পর তিনি হাতে গোনা কয়েকদিন ছাড়া ছুটিও কাটাননি বলে জানান।  এমইউ/একে/আরআইপি