দেশজুড়ে

কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে বিপর্যয়

রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অবরোধের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। ভর পর্যটন মৌসুমে পর্যটন শূন্য পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির পাশাপাশি ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।কক্সবাজার আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ শফিকুর রহমান জানান, নভেম্বর থেকে মার্চ এ ৫টি মাসকে ভর পর্যটন মৌসুম হিসেবে নিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা নানা প্রস্তুতি নেন। এবার তার কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু, বছরের শুরুতে হরতাল আর অবরোধ তাদের এ আশাকে হতাশায় পরিণত করেছে। তিনি জানান, ২০১৩ সালের পর্যটন মৌসুমটিও রাজনৈতিক অস্থিরতার কবলে পড়েছিল। এতে তাদের যে ক্ষতি হয়েছিল তা পুষিয়ে নিতে প্রস্তুতি নিলেও একই ঘটনা আবারো হচ্ছে। বিশেষ করে ডিসেম্বরের থার্টি ফাস্ট নাইটে কিছু সংখ্যক পর্যটক আসলে এখন প্রায় পর্যটন শূন্য। অভিজাত হোটেল ভিস্তা বে রিসোর্টের সত্ত্বাধিকারি আবু তাহের জানান, রাজনৈতিক পরিস্থিতি গত বছর তাদের ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। জানুয়ারির শুরু থেকে ১২ দিনে কক্সবাজারের সাড়ে ৪ শতাধিক আবাসিক প্রতিষ্ঠানে আবারো ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার আশংকা রয়েছে।সৈকত ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি খাইরুল আমিন জানান, অবরোধের কারণে প্রায় পর্যটন শূণ্য কক্সবাজার। এখানকার রেস্তোরা, পর্যটন এলাকার দোকান এবং আবাসিক হোটেল মালিকরাই এখন নানা ক্ষতির আশংকায় উদ্বেগ দিন কাটাচ্ছেন।সৈকতের লবণী পয়েন্টে অবস্থিক তাব্বাক রেস্তোরার প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে আসলে তারা কিছুটা ব্যবসা করলেও এখন শূন্য। ফলে ফাঁকা পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন।সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারি বিলাস বহুল জাহাজ গ্রীণ লাইন এর প্রধান নির্বাহী নজরুল ইসলাম জানান, ৫ জানুয়ারির পর থেকে কোন পর্যটক নেই। তবে কক্সবাজারের একটি সাংবাদিক সংগঠনের আনন্দ ভ্রমণ উপলক্ষ্যে তারা একবার সেন্টমার্টিন গিয়ে ছিলেন। এরপর তারা আর সেন্টমার্টিনের যাত্রী পাননি। একই সঙ্গে সেন্টমার্টিন চলাচলকারি অন্যান্য জাহাজও বন্ধ রয়েছে।সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে বর্তমানে ৬০ শতাংশ মানুষের প্রধান জীবিকা মাধ্যম পর্যটক। পর্যটন মৌসুমে তারা ব্যবসা করে পর্যটকদের সেবা দিয়ে যা আয় করেন তা নিয়ে পুরো বছর চলেন। বর্তমানে পর্যটক শূন্যতা তাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহেশখালীর পৌর মেয়র মকসুদ মিয়া জানান, পর্যটন মৌসুমে সোনাদিয়া ও আদিনাথ মন্দিরে পর্যটকরা ভ্রমণে গেলেও বর্তমানে কোনো পর্যটক নেই।

Advertisement